নদীয়া:- শান্তিপুর পটেশ্বরী স্ট্রীটের বাসিন্দা হরিপদ সরকারের একমাত্র কন্যা মৌমিতার সাথে শান্তিপুর বাইগাছি পাড়ার মনিন্দ্র দেবনাথের ঘটক মারফত বিবাহের যোগাযোগ। মণিন্দ্র এক দাদা বৌদি এবং মৌমিতার মা-বাবার মধ্যে এক প্রস্থ পাকা কথা হয়ে গেলেও, অপর এক আশ্রয়দাতা দাদা বৌদির ঘোরতর আপত্তি ছিল বিয়ের ব্যাপারে। কারণ হিসেবে এলাকার সূত্রে জানা যায়, মণিন্দ্রর পিতা মারা যাবার পর তাদের জমি জমার ভাগ বন্টন হয়নি ফলে অবিবাহিত মনিন্দ্র তার এই দাদার কাছেই থাকে। মণিন্দ্র বিবাহ করলেই ঘরের ভাগীদার হবে, তাই হয়তো দাদা বৌদির আপত্তি। ঘটকের প্রথম পরিচয় করানোর পরেই মনিন্দ্র আর মৌমিতার যোগাযোগ বাড়তে থাকে ক্রমেই, একে অন্যকে ভালোবেসে ফেলে। দুজনেই বিশেষভাবে সক্ষম হওয়ার কারণে, বিশ্বাস এবং ভরসা অনেকটাই বেড়ে যায় একে অপরের প্রতি। কালবিলম্ব না করে তারা সিদ্ধান্ত নেয় বিবাহের। সেইমতো গতকাল মৌমিতার মা-বাবার উপস্থিতিতে গোবিন্দপুর কালীবাড়িতে মায়ের মন্দিরে পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণে চার হাত এক হয়। এরপরে মণিন্দ্র বাইগাছি পাড়ার বাড়িতে পৌঁছালে বাধে বিপত্তি। নতুন বউ প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে দরজা খোলেনা তারা। প্রতিবেশী একে একে সকলেই অনুনয়-বিনয় করলেও মেলেনা সুফল, বন্ধ দরজার সামনে বসে পড়ে নবদম্পতি। পাড়ার মেয়ে বৌরা বরণ এবং অন্যান্য নানান নিয়ম কারণ পালন করতে থাকে খোলা উঠোনেই, ভিড় জমতে থাকে পাড়ার দাদাদের। তাদের চোখ রাঙ্গানোতেও খোলেনা দরজা, অবশেষে স্থানীয় প্রতিবন্ধী সংগঠনের সদস্যদের উপস্থিতিতে, সাংবাদিকদের প্রচেষ্টায় পুলিশের সহযোগিতায় 4 ঘন্টা বাদে, হাসি ফোটে দম্পতির মুখে। দাদা বৌদি বাধ্য হয় দরজা খুলে দিতে। প্রতিবেশীরা নিজেরাই কিনে আনেন মিষ্টি, পাড়ার ছেলেরা দিলো উপহার। সাজিয়ে দিলো ফুলশয্যার খাট।
রাস্তার পাশে ছোট্ট একটি দোকান থেকে কোনরকমে পেট চলার মতন উপার্জন করে মণিন্দ্র। দুজনের এক হাজার টাকা করে মাসে সরকারি ভাতার ভরসা প্রতিবেশী এবং পাড়ার ছেলেদের বিশ্বাস তাদের মনোবল আরো বাড়িয়ে তোলে। বিয়ের আনন্দে মাতোয়ারা গোটাপাড়া।