ইন্দ্রজিৎ আইচঃ আজ ২৮ এ ফেব্রুয়ারি সোমবার থেকে শুরু হয়ে গেলো সরকারী স্বাস্থ্য ও কোভিড বিধি মেনে ৪৫ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা ২০২২। আজ বিকেল ৪ টের সময় সেন্ট্রাল পার্কের মেলা প্রাঙ্গণে এই বই মেলার শুভ সূচনা করেন বাংলার মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তার ভাষণে বলেন বাংলা ও বাংলাদেশ এক অভিন্ন হৃদয় বন্ধু, আমাদের দুই দেশের ভাষা এক, সংস্কৃতি এক। বাংলাদেশ-বাংলা র সংস্কৃতি একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান। এই সেন্ট্রাল পার্কে প্রতি বছর এখানেই বইমেলা হবে। এর নাম আজ থেকে দিলাম বইমেলা প্রাঞ্জন। বাংলার নিজস্ব একটা সংস্কৃতি আছে। বহু বিখ্যাত মানুষ মারা গেছেন কোভিডে ও যুদ্ধে। তাঁদের জন্য বইমেলায় বিশ্ব শান্তির উদ্দেশ্যে আসুন নীরবতা পালন করি। যুদ্ধ থামুক। বিশ্বে শান্তি ফিরে আসুক এই কামনা করি। ৪৫ তম বইমেলার সাফল্য কামনা করি। মেলার মঞ্চ থেকে প্রকাশিত হলো মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ১২ টি বই। মেলার মঞ্চে ৪৫ বার ঘন্টা বাজিয়ে এই বইমেলার শুভ সূচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চে ছিলেন বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রী কে এম খালিদ, বাংলাদেশের উপ রাষ্ট্রদূত তৌফিক হাসান, সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, এই বাংলার জনপ্রিয় লেখক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মন্ত্রী ববি হাকিম, মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী জনাব সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, মন্ত্রী সুজিত বসু, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, রাজ্য সভার সংসদ দোলা সেন, এম পি শান্তনু সেন, বিধায়ক অদিতি মুন্সী, কবি সুবোধ সরকার, চিত্রকর শুভাপ্রসন্য, ডিজি মনোজ মালব্য ,পুলিশ কমিশনার। বিনীত গোয়েল, হুমায়ুন কবির সহ আরো অনেক কবি ও সাহিত্যিকরা। মঞ্চে বিশিষ্ট মন্ত্রী, শিল্পী ও সাহিত্যিকদের হাতে বইমেলার পক্ষ থেকে উপহার তুলেদেন বইমেলার সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, সভাপতি সুধাংশু শেখার দে। সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় জানালেন এইবার যেহেতু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশত বর্ষ ও বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর তাই বইমেলার থিম কান্ট্রি হলো বাংলাদেশ। এবার থাকছে বাংলাদেশ এর ৪২ টা প্রকাশক, ৫০ টি স্টল ও তিনটি গেট। এবার তৃতীয় বারের জন্য ফোকাল থিম থাকছে বাংলাদেশ। বইমেলার সভাপতি সুধাংশু শেখর দে জানালেন মোট ৬০০ টি স্টল থাকছে। গেট থাকছে ৯টি ও লিটিল ম্যাগাজিন এর স্টল হবে ২০০ টি। বইমেলার দুটি হল হচ্ছে সুভাষচন্দ্র বসু ও ঋষি অরবিন্দর নামে। লিটিল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়ন হবে কবি – সম্পাদক শম্ভু রক্ষিত ও প্রভাত চৌধুরীর নামে। প্রেস কর্ণা র নির্মিত হচ্ছে প্রয়াত সাংবাদিক শৌণক লাহিড়ী , ঝিমলি মুখার্জী পান্ডে ও অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে এবং মুক্ত মঞ্চ নির্মিত হবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নামে। অনেক নতুন প্রকাশক এবারের মেলায় অংশ নেবে।বই যারা কিনবে তাদের লটারি হবে, ১৫ জন ভাগ্যবান বিজেতা মেলা থেকে বই কেনার জন্য ১০০০ টাকার গিফ্ট ভাউচার পাবেন। থাকছে বই কিনুন লাইব্রেরি জিতুন। চার দিনের বই বাম্পার লটারি হবে। থাকছে ২৫০০০ বুক গিফ্ট কুপন। বাংলাদেশ দিবস পালিত হবে ৩ ও ৪ মার্চ। শিশু দিবস হবে ৪ মার্চ। বাংলাদেশ ছাড়াও থাকছে ব্রিটেন, আমেরিকা, রাশিয়া, ইতালি, স্পেন, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো ও ল্যাটিন আমেরিকা। ১১ ও ১২ ই মার্চ অন লাইন ও অফ লাইনে হবে কলকাতা লিটেরেচার ফেস্টিভ্যাল।এই সাহিত্য উৎসব পরিচালনা করবেন সুজাতা সেন। সব মিলিয়ে জমে উঠবে এবারের আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা ২০২২। থাকছে বিখ্যাত প্রয়াত ৩৩ জন নামি মানুষদের নিয়ে থাকবে বিশেষ প্যাভিলিয়ন। উপস্থিত ছিলেন সুজাতা সেন, স্টেট ব্যাংক এর প্রতিনিধি সুব্রত হাজরা, পিয়ারলেস হসপিটাল এর পক্ষে সুদীপ্ত মিত্র, ব্রড ব্যান্ড আলায়েন্স এর রাতুল মৈত্র, টেকন ইন্ডিয়া সিস্টার নিবেদিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এর পক্ষে কৌশিক সরকার, জুট বোর্ড এর পক্ষে মলয় চক্রবর্তী, সি ই এস সি পক্ষে ডিনা রায় এবং (গিল্ডের) রাজু বর্মন, তাপস সাহা, শ্রীবেন্দু ভট্টাচার্য, মিলিন্দ দে, যোগেশ তান্না, শুভঙ্কর দে (অপু) সহ আরো অনেকে।ফোকাল থিম এর ক্যাপশন হলো ” সৃজনে মননে মানবিক দেশ.বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর বাংলাদেশ “। এ বছর উদ্বোধনী মঞ্চ থেকেই সি ই এস সি সৃষ্টি সন্মান ২০২২ প্রদান করা হয় বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় কে। তাঁর হাতে এই সন্মান প্ৰদান করেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।