কলকাতা প্রেস ক্লাবে টিউটরস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার সাংবাদিক সম্মেলন


ইন্দ্রজিৎ আইচঃ কোলকাতা ২৯ শে মার্চ ,২০২২: আপনাদের সামনে সর্বভারতীয় গৃহ শিক্ষক সংগঠন বা Tutors Welfare Association of India আত্মপ্রকাশ করলো আজ কলকাতা প্রেস ক্লাবে। উপস্থিত ছিলেন সুজয় কুমার বর্মন , চেয়ারম্যান , স্বপন দত্ত ( উজ্জ্বল ) , সর্বভারতীয় সভাপতি , সোহম ভট্টাচার্য , সর্বভারতীয় সম্পাদক এবং অন্যান্য সদস্য সুব্রত মন্ডল , নিখিলেশ রায় , বিজিত বিশ্বাস এবং শেখর নন্দী মহাশয়। এই সাংবাদিক সম্মেলনে সোহম ভট্টাচার্য জানালেন সাড়া ভারতবর্ষে আমাদের সদস্য সংখ্যা ৬৫ হাজারের বেশি। বাংলায় ১৯ হাজার। একাডেমিক টিউটরস ছাড়াও এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন আঁকা , নাচ , গান , আবৃত্তি , karate , তবলা সহ যে কোন বাদ্য যন্ত্রের টিউটরস, বিভিন্ন খেলার সঙ্গে যুক্ত প্রশিক্ষক ইত্যাদি যারা সরকারি বা সরকার পোষিত স্কুলের সঙ্গে যুক্ত নয়। গত ১০ ই নভেম্বর , ২০২১ এ রেজিস্ট্রেশন পেয়েছে এবং এর উদ্দেশ্যেই হলো সারা দেশের সকল টিউটরস ফ্রেটারনীটির দাবীদাওয়া এবং তাদের অভিযোগ গুলি তুলে ধরা এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো।

TWAI এর সদস্য হওয়ার আগে এই সংগঠনের সদস্যদের গৃহ শিক্ষকদের স্বার্থে বা বিপদে রাজ্য জুড়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে । বিভিন্ন সময়ে অন্যান্য রাজ্যের টিউটরসরা এমনকি বিদেশে বসবাসকারী টিউটরস রাও আমাদের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এবং তারপরই TWAI গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সর্বভারতীয় সংগঠন স্থাপন করার গুরুত্ব বা তাগিদ অনুভব করে। সর্বভারতীয় সভাপতি স্বপন দত্ত জানালেন ” সমাজ গঠনে টিউটরস দের ভূমিকা আজ অবধি কোন সরকার স্বীকার করেনি। এবং আমাদের সংগঠনের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো শিক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্নীতি মুক্ত করা।

টিউটরস রা সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও তারা সবসময় সমাজে কেমন যেন অবহেলিত শ্রেণীর প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং তাদের সরকারি প্রকল্পের আওতায় আনা হয়না। করোনা মহামারীর সময় সারা দেশেই স্কুল বা সর্বপ্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। চালু ছিল অনলাইনের মাধ্যমে পড়াশুনো। কিন্তু, ভারতের বিভিন্ন শহর বা শহরতলী বাদ দিলে কোথায় হল স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস ? এমতাবস্থায় সেই সব অঞ্চলে ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশুনো চালিয়ে গেছেন গৃহ শিক্ষকরা সরকারি কোভিড বিধি মেনে। আমাদের গ্রামীন আর্থসামাজিক অবস্থায় ন্যূনতম পারিশ্রমিক নিয়ে বা না নিয়ে। তবুও গৃহ শিক্ষকদের এই অবদানের কথা রাজ্য তথা কেন্দ্র সরকার জানা স্বত্বেও একথা তারা স্বীকার করেননি বা সেই শিক্ষকদের প্রাপ্য টুকু দেয়নি। নাচ , গান , আবৃত্তি, karate , অঙ্কন , তবলা সহ বিভিন্ন বাদ্য যন্ত্রের ও খেলাধুলার প্রশিক্ষকগণ এই মহামারীর সময়ে সামান্য পারিশ্রমিকের বিনিময়ে আবার কখনো বিনা পারিশ্রমিকে দিনের পর দিন তাদের কাজ করে গেছেন ছাত্র ছাত্রীদের সার্বিক উন্নতির কথা ভেবে।

আমাদের সংগঠনের *দাবী সমূহ হলো

ক) সারা দেশে R.T.E Act , 2009 এর সঠিক প্রয়োগ।
খ) সরকারী বা সরকারী সাহায্য প্রাপ্ত স্কুলের অসংখ্য শিক্ষকগণ স্কুলের সিলেবাস শেষ করাতে পারেন না। তার অন্যতম কারণ হলো সরকারি স্কুল শিক্ষকদের সরকারী আইন ভেঙে গৃহ শিক্ষকতা। এর ফলে, তারা R.T.E Act এর 24 এবং 28 ধারা লঙ্ঘিত হচ্ছে।

গ) TWAI এর সদস্য হওয়ার আগে আমরা রাজ্যের সব জেলার District Inspector of Schools দের কাছে নিদিষ্ট করে কিছু স্কুল শিক্ষকের নামে অভিযোগ করা হয়েছে যারা R.T.E Act ও রাজ্য সরকারের 2018 এর আইন অমান্য করে টিউশন করে চলেছেন। D.I অভিযুক্ত শিক্ষকদের থেকে মুচলেখা নিয়েই দায় এড়িয়ে গেছেন কোন তদন্ত না করেই। বেশিরভাগ স্কুলের H.M স্কুলের শিক্ষকদের এই বেআইনি কাজ সমর্থন না করলেও শিক্ষকরা H.M এর কথায় কর্ণপাত করেননা। যে কারণে স্কুলের H.M দের স্কুল পরিচালনা করা কঠিন হচ্ছে শিক্ষকরা সময়মত স্কুলে না আসার জন্য।
NCPCR ও WBCPCR কেও জানানো হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকেও এই অবৈধ কাজের বিরুদ্ধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।আমরা অভিযুক্ত শিক্ষকদের নামে সব স্তরের প্রশাসনিক দফতরে ডেপুটেশন দিয়েছি স্কুলগুলির হেড মাস্টারমশাইয়ের কাছে , ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে, পৌরসভার পৌরপ্রধান, পৌরপিতা , পঞ্চায়েত স্তরের প্রধান , সভাপতি , এমনকি B.D.O এর কাছেও ডেপুটেশন দিয়েছি।
District Magistrate , District Inspector of Schools , Nibedita Bhawan , Derozio Bhawan এর সভাপতিদের কাছেও স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। এমনকি 31 শে জুলাই, 2018 য় তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জির কাছেও আবেদন করা হয়েছিল কিন্তু আমাদের অভিযোগ এবং আবেদনের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।

ঘ)অভিযোগ পাওয়ার পরে D.I বা স্কুল পরিদর্শক অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষকদের থেকে মুচলেখা সংগ্রহ করে অভিযোগের কোনরকম তদন্ত না করেই ক্ষান্ত থাকেন।

ঙ) ড্রপ আউট হয়ে যাওয়া ছাত্র ছাত্রীদের পুনরায় স্কুলে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন রাখছি।
চ) ছাত্র ছাত্রীর অভাবে বা পরিকাঠামোর অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারী স্কুলগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে।

ছ) সরকারের উচিত নিয়মিত স্কুল শিক্ষকদের উপর নজরদারী করা এবং দেখা স্কুল শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করছেন কিনা দেখতে।

জ) Tutors দের জন্য একটি “পর্ষদ” গঠনের দাবী জানাচ্ছি ।

ঝ) একটি Grievance Cell গঠনের দাবী জানাচ্ছি যাতে অভিভাবক , অভিভাবিকা থেকে শুরু করে অন্যান্যরাও স্কুল সংক্রান্ত বা কলেজ সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে পারেন ।

ঞ) সরকারী শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতার দাবী জানানো হচ্ছে।

ট) শিক্ষার মধ্যে থাকা নৈরাজ্যের অবসানের দাবী জানাচ্ছি।

দেশের বর্তমান আর্থসমাজিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে সরকারি স্কুল গুলোর পরিকাঠামো এবং পরিদর্শন বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি যাতে সবাই শিক্ষার আলো পেতে পারে। সবাই বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা করতে পারে না।

About Tutors Welfare Association of India :

TWAI গত ১০ ই নভেম্বর , ২০২১ এ রেজিস্ট্র্শন পেয়েছে। রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি হলো 249438 এই সংগঠন ভারতবর্ষের Tutors দের পাশে থাকতে অঙ্গীকারবদ্ধ। শিক্ষার উন্নতি এবং শিক্ষার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জাঁকিয়ে বসা দুর্নীতি ও নৈরাজ্যতার অবসান ঘটাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। TWAI সংকল্পবদ্ধ শিশুদের অধিকার সুরক্ষিত করতে এবং পর্ষদ গঠন করতে সরকারের সহযোগিতা।

About The Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights