সুমিত ঘোষ: মালদা- রাসায়নিক প্রয়োগের ফলে কমছে মালদার আমের রপ্তানি। আর যারা বাজার ধরে রাখতে এবং বিশ্ববাজারে মালদা আমকে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এক ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়। এদিনেই ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয় মালদার জেলা ফুড প্রসেসিং দপ্তরের। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ফুড প্রসেসিং ডাইরেক্টর বিকাশ সাহা, জেলাশাসক রাজর্ষী মিত্র, মালদা ম্যাংগো মারছেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জল সাহা, মালদা জেলার আমচাষি সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা। মালদা জেলায় এবার ৩১হাজার ৭০০হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে।মালদর আমার নাম জগৎখ্যাত রয়েছে। আরে এই আম জেলা সহ রাজ্য তথা দেশের বাইরে রপ্তানি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতো মালদার আম চাষিরা। সম্প্রতি বেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে মালদার আমের গুণগতমান যথেষ্ট কম। আর সেই কারণে মালদার আম বিদেশের বাজারে কেনা বেচা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে আরও একটি কারণ লক্ষ্য করা গিয়েছে মালদায় যে সমস্ত আম বাগানের মালিকের রয়েছে তারা আমবাগান লিজে দিচ্ছে। যার ফলে লিজে নেওয়া মালিকেরা বেশি ফলন পাওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম রাসায়নিক সার প্রয়োগ করছে। যাতে আমের ফলন বাড়ছে তবে গুণগতমান একদম কমে যাচ্ছে। ফলে মালদা জেলার আম জেলাতেই থেকে যাচ্ছে। বিদেশের বাজারে তার কোনো চাহিদা থাকছে না। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছে চাষিরা। আর সেই কারণেই এদিন রাজ্য সরকারের উদ্যোগে চাষীদেরকে নিয়ে একটি ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়। যেখানে চাষীদেরকে আমের গুণগত মান সম্পর্কে জানানো হয়। যাতে কোন ভাবেই মালদার আমের গুণগত মান কমে না যায়। চাষীদের মুনাফা অর্জন হয়।
ওয়াকসপে আসা এক চাষী পিন্টু ঘোষ জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গুণগত আম চাষের কথা বলা হলেও তাতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।কারণ বাজারে যে সমস্ত রাসায়নিক সার বিক্রি হচ্ছে সে ক্ষেত্রে কোনো বাধা-নিষেধ করা হচ্ছে না প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কৃষকদেরকে এগুলো বললে হবেনা কার্যত প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে আমের গুণগতমান কখনোই ফিরবে না। আমরা সব সময় চাই মালদার আম বিশ্ব বাজারে বিক্রি হোক। তাহলে আমাদের কিছুটা হলেও বেশি মুনাফা অর্জন হবে। মালদা ম্যাংগো মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জল সাহ জানান, মালদার আম কিভাবে বিশ্ব বাজারে বিক্রি করা যায় তা নিয়ে এদিনক কৃষকদেরকে বোঝানো হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে রাসায়নিক সার ও জৈব সার প্রয়োগ করে আম চাষ করে তার মর্যাদা বজায় রাখতে হবে। এতে অনেক চাষি সহমত পোষণ করেছেন। যদি আমের গুণগত মান ঠিক হয় তাহলে সেই আম বিশ্ব বাজারে বিক্রি করে কিছু করা প্রচুর মুনাফা অর্জন করতে পারবে তাকে কৃষকদের অসুবিধা এবং মালদার নাম সেখানে বজায় থাকবে। জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, মালদার আমের যথেষ্ট নাম রয়েছে। আর সেই কারণেই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে মালদার আমের বিদেশের বাজারে গুণগত মান বজায় রেখে বিক্রি করা যায় সেই উদ্দেশ্যে মরসুমের শুরুতেই আমচাষীদের ওয়াকসপ করা হচ্ছে। যাতে তারা বেশি পরিমাণে আয় করতে পারে। রাজ্য ফুড প্রসেসিং ডিরেক্টর বিকাশ সাহা জানান, এদিনের ওয়াক শপের কৃষকদেরকে মালদার আমের গুণগত সম্পর্কে জানানো হয়েছে। যাতে তারা এই গুণগতমান বিশ্ববাজারে ধরে রাখতে পারে। যাতে কৃষকদের চাষ করা ফসল বিক্রি করে নিজেরাই উপকৃত হতে পারবেন।