মুর্শিদাবাদ বালিয়া প্রেরণা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জেলা জুড়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সচেতনতার প্রচার ও চারা গাছ বিতরণ


রাজেন্দ্র নাথ দত্ত,মুর্শিদাবাদ : মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের মির্জাপুর গ্রামে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করলো খড়গ্রাম ব্লকের মুর্শিদাবাদ বালিয়া প্রেরণা ফাউন্ডেশনের রঘুনাথগঞ্জ শাখা।প্রতিনিয়ত দূষণ বেড়েই চলেছে। এই দূষণের কারণে সারা বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় সত্তর লক্ষ মানুষ মারা যান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী। প্রতিবছর ভারতে যত মৃত্যু হয় তার এক তৃতীয়াংশ মৃত্যু হয় বায়ু দূষণের কারণে এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ জার্নাল, ২০২১। বায়ু দূষণ, জল দূষণ, শব্দ দূষণের কারণে মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমছে, ক্যানসার হচ্ছে, স্মৃতিশক্তি লোপ পাচ্ছে, হার্ট এ্যাটাক হচ্ছে এমনকি বধির হওয়ার মতো রোগও বেড়েই চলেছে। মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমছে এই দূষণের কারণে। অতিরিক্ত গাছ কাটার ফলে পরিবেশ উষ্ণ থেকে উষ্ণতর হয়ে উঠছে। অক্সিজেনের অভাব দেখা দিচ্ছে। ছোটো ছোটো ডোবা, জলাশয়, খাল বিল ভরাট করে প্রমোটারি রাজ চলছে। ফলে বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হচ্ছে।পরিবেশকে দূষণ মুক্ত করতে ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি পথে নেমে মানুষকে বুঝানোর চেষ্টা করছে দূষণ বিষয়ে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে মানুষকে পরিবেশ নিয়ে সচেতন করতে মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন জায়গায় রঘুনাথগঞ্জ,মির্জাপুর, গণকর, ডোমকল,জলঙ্গী, রাণীনগর ও দৌলতাবাদে করা হয়েছে পোস্টারিং।নদীকে দূষণমুক্ত করতে নদীতে ঠাকুর দেবতার মূর্তি বিসর্জন বন্ধ করুন; নদী বাঁচাতে নদীতে আবর্জনা ফেলা বন্ধ করুন; ৫ ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস দিচ্ছে ডাক পরিবেশ ধ্বংসকারীরা নিপাত যাক; সাম্রাজ্যবাদীদের হাত থেকে প্রকৃতিকে মুক্ত করো ; দূষণ কমাতে বনসৃজন এবং পরিবেশবান্ধব যানবাহন চাই ; জনবসতি এলাকায় দূষণ সৃষ্টিকারী পণ্য উৎপাদন ও কারখানা গড়ে তোলা বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ ইত্যাদি শ্লোগান সম্বলিত পোস্টার মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন শহর ও গ্রামের দেওয়ালে দেওয়ালে লাগানো হয়েছে জনগনকে পরিবেশ বিষয়ে সচেতন করার জন্য। পরিবেশ দিবসে মুর্শিদাবাদবাসীর মধ্যে গাছের চারা বিতরণ করা হয় এবং গাছ রোপণ করা হয়। পথসভার মাধ্যমে মানুষকে বোঝানো হয় আমাদের এই সুন্দর পরিবেশকে কারা ধ্বংস করছে এবং দূষণমুক্ত সমাজ গড়তে মানুষের করনীয় কি? এ প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ বালিয়া প্রেরণা ফাউন্ডেশনের সম্পাদক বলেন, দূষণ হলো নীরব ও ধীর ঘাতক। দূষণ প্রতিরোধে আইন আছে কিন্তু তা বাস্তবে প্রয়োগ করার মতো সরকারের তরফ থেকে কার্যকরী উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা কোনোটাই নেওয়া হয় না। দূষণ নিয়ন্ত্রণে ও পরিবেশ রক্ষার্থে বনদপ্তর এবং পরিবেশ দপ্তরের ভূমিকাও নেতিবাচক। বিষাক্ত আগাছা পার্থেনিয়াম নিধনের কোনো ব্যবস্থা সরকার, পঞ্চায়েত বা পৌর প্রশাসন নিচ্ছে না। দূষণের থাবা থেকে পরিবেশ ও মানব সভ্যতাকে বাঁচাতে মানুষের সচেতনতা বোধ এবং গণ পরিবেশ আন্দোলন খুবই জরুরী। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সভাপতি বলেন, পরিবেশ ভালো না থাকলে আমরা কেউই সুস্থ ভাবে বাঁচতে পারবো না। পরিবেশকে বাঁচাতে আমাদের সকলকে দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। আমরা শুধু আজকেই নয়, বিভিন্ন সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়েও দূষণ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার কাজটাও করছি।

About The Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights