পিসি চন্দ্র গ্রুপ ৮৫ তম প্রতিষ্ঠা দিবসে একত্রিশতম পুরস্কার দিয়ে ভূষিত করলেন চন্দ্রযান-৩ মিশনের প্রধান নায়ক বিজ্ঞানী সোমানাথ এস কে।


কলকাতা, ২১ এপ্রিল, ২০২৪: সম্প্রতি পিসি চন্দ্র গ্রুপের বার্ষিক জাতীয় পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে গেল কলকাতার সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে। একত্রিশতম বর্ষে পড়ল এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। এই বছরের পিসি চন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানী ড. সোমানাথ এস। ভারতের চন্দ্রযান-৩ মিশনের পিছনে বিশেষ কৃতিত্ব রয়েছে তাঁর। মহাকাশ বিজ্ঞানে এই সময় ভারত সাম্প্রতিক ভাবে অনেকটাই এগিয়ে। এদিন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পিসি চন্দ্র গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রী এ.কে চন্দ্র, পিসি চন্দ্র জুয়েলার্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর উদয় কুমার চন্দ্র, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অমিতাভ চন্দ্র এবং পিসি চন্দ্র জুয়েলার্সের ডিরেক্টর উদীপ্ত চন্দ্র, এবং অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা। ডঃ সোমানাথ এস একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী (এপেক্স গ্রেড) এবং ইসরো এর মহাকাশ বিভাগের চেয়ারম্যান। তার ৩৮ বছরের কর্মজীবনে মহাকাশ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সোমানাথ চন্দ্রায়ন লঞ্চ এর সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ এর ভূমিকা পালন করেছেন। সচিব হিসাবে, তিনি জাতীয় মহাকাশ নীতির পরিচালনা করেছিলেন। ভারত কে মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে প্রথম সৌরযান আদিত্য এল-১ মিশনের জন্য তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং সফলতা অর্জন করেন।। তার নেতৃত্বে দুটি নতুন উৎক্ষেপণ যান – স্মল স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল এবং টেস্ট ভেহিকল ভারতে চালু করা হয়েছিল এবং মিশনগুলি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছিল। পুনঃব্যবহারযোগ্য লঞ্চ ভেহিক্যালের সফল অবতরণ পরীক্ষাটি ভারতের জন্য আরেকটি সফলতা ছিল। এই পুনঃপ্রবেশকৃত উইংড বডির স্বায়ত্তশাসিত অবতরণ প্রদর্শন যা বিশ্বের খুব কম দেশই সম্পন্ন করেছে।
২০১৮ সালের গোড়া থেকেই তিনি বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের পরিচালক, এবং ইসরো -এর প্রধান হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন। তার নেতৃত্ব ভিএসএসসি প্যাড অ্যাবর্ট টেস্ট অরথাত প্যাট, জিএসএলভি এম কে-৩ / চন্দ্রায়ন ৩ এর উৎক্ষেপণের মতো উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব অর্জন করেছে।
এর আগে তিনি লিকুইড প্রপালশন সিস্টেম সেন্টার এর পরিচালক ছিলেন যেখানে তিনি সিএ ২০ ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন এবং সি২৫ এর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যা জিএসএলভি এমকে-৩ ডি-১ ফ্লাইটে সফলভাবে উড্ডয়ন করা হয়েছিল। তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল একাডেমি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ভারতের অ্যারোনটিক্যাল সোসাইটি, অ্যাস্ট্রোনটিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া , ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস, ইন্ডিয়ার ফেলো এবং ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অফ অ্যাস্ট্রোনটিক্স এর একজন সদস্য।
তিনি জার্নাল এবং সেমিনারে কাঠামোগত গতিবিদ্যা এবং নিয়ন্ত্রণ, পৃথকীকরণ প্রক্রিয়ার গতিশীল বিশ্লেষণ, কম্পন এবং শাব্দ পরীক্ষা, লঞ্চ যানের নকশা এবং লঞ্চ পরিষেবা পরিচালনার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন।
পিসি চন্দ্র গ্রুপ ১৯৯৩ সাল থেকে এই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান শুরু করেছে। পিসি চন্দ্র গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত পূর্ণচন্দ্র চন্দ্রর স্মৃতিতে এই বার্ষিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান হয়ে আসছে গত ত্রিশ বছর ধরে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের কৃতী ব্যক্তিত্বদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে মান্না দে (১৯৯৩) এর পরে প্রফেসর ইউ আর রাও (১৯৯৪), শ্রী সুনীল এম গাভাস্কার (১৯৯৫), শ্রীমতি পি.টি. উষা (২০০৪), শ্রী মৃণাল সেন (২০০৪), গুলজার সাব (১৯৯৭), ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান সাহেব (২০০২), শ্রীমতি। অঞ্জু ববি জর্জ (২০০৭), শ্রী সৌরভ গাঙ্গুলি (২০১১), শ্রীমতি হেমা মালিনী (২০১৩), পণ্ডিত হরি প্রসাদ চৌরাসিয়া (২০১৪), ড. কে. রাধাকৃষ্ণান (২০১৫), গ্র্যান্ডমাস্টার বিশ্বনাথন আনন্দ (২০১৬), নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী (২০১৭), ড. দেবী শেঠি (২০১৯), শ্রী কপিল দেব (২০২১), ওস্তাদ আমজাদ আলী খান (২০২২), ম্যারি কম (২০২৩)।
এই অনুষ্ঠানে পি.সি. চন্দ্র জুয়েলার্স এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর, শ্রী অমিতাভ চন্দ্র বলেছেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠাতা পিতা প্রয়াত শ্রী পূর্ণ চন্দ্র চন্দ্রের স্মরণে আমাদের বার্ষিক পুরষ্কার অনুষ্ঠান পালন করে থাকি। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রবীণ এবং বহুমুখী কিংবদন্তিদের সম্মান করার সুযোগ পেয়ে থাকি। এই বছর আমরা অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি ভারতের একজন সেরা বিজ্ঞানীকে অভিনন্দন জানাতে পেরে। ডক্টর, সোমানাথ এস ভারতের মহাকাশ অভিযানকে গৌরবের শিখরে নিয়ে গেছেন । আমরা নিশ্চিত যে ইসরো তার তত্ত্বাবধানে সাফল্যের শিখরে পৌঁছে যাবে। আমার আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা সকল উল্লেখযোগ্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরও যাঁরা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন। ‘’

About The Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights