সুমাল্য মৈত্র- কিছু মানুষের মৃত্যু হয় কল্পনায় কিন্তুু সেই মানুষটা থেকে যায় সবার মননে । বিশিষ্ট আবৃত্তিকার প্রয়াত সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন তেমনই এক মানুষ যার অনুপস্থিতি একবারের জন্যও অনুভব হয়নি আবৃত্তি কেন্দ্রের জন্মদিনে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে স্মরণ করার মধ্যে দিয়ে। শনিবার ২/৫/২০২২ উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার নিউব্যারাকপুরের রামকৃষ্ণ পাঠাগারে অগনিত ছাত্র- ছাত্রি ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের চোখের জলে আবেগে পূর্ণতা পেলো সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী । সেদিনই ছিলো আবৃত্তি কেন্দ্রের জন্মদিনও। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণে কোথাও যেন মৃত্যু দিন জন্মদিন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছিলো । অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সজন ও সুজনেরা।
গুরু বন্দনা দিয়ে অনুষ্ঠানের সুর বেঁধে দেয়া হয়।এরপর নিউ ব্যারাকপুর পুরসভার পৌর প্রধান প্রবীর সাহা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পরিবেশন করেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতির প্রতি । এরপর শিবানী চট্টোপাধ্যায় এর পরিচালনায় গুরু বন্দনা মাধ্যমে শিক্ষক ও প্রখ্যাত আবৃত্তিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি সম্মান জানান।
গুরু বন্দনার পরে আবৃত্তি কেন্দ্রের শুভাকাঙ্ক্ষী সমীর চট্টোপাধ্যয় আবৃত্তি কেন্দ্রের পক্ষ থেকে স্মৃতি চারিত বক্তব্য রাখেন। তার কথার মধ্যে ছিলো সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে ছুঁয়ে থাকার এক অনুচ্চারিত অনুভুতি । ১৯৮৬ সালের ২ রা এপ্রিল গড়ে ওঠে আবৃত্তি কেন্দ্র নামক আবৃত্তি সংস্থা। আবার এই ২ রা এপ্রিলই ছিলো সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের চলে যাওয়ার এক বছর।
এদিন তাই মৃত্যু দিনের বর্ষপূর্তি ও আবৃত্তি কেন্দ্রের জন্মদিন শোক ও আনন্দ কোথাও যেনো হাত ধরাধরি করেই হেঁটে এসেছে। এদিনের অনুষ্ঠানে সোমদত্তা চট্টোপাধ্যায় এর পরিচালনায় পরিবেশন হয় কচিকাঁচাদের আবৃত্তি পাপাঙ্গুল। সুকান্ত ভট্টাচার্যের বোধন কবিতাটা একক আবৃত্তি করেন সুচেতনা চক্রবর্তী । এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আবৃত্তি কেন্দ্রের কাছের মানুষ বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী ও কোরিওগ্ৰাফার কল্যান বকসি। কল্যান বকসিই অনুষ্ঠানে রীতি অনুযায়ী প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন ।
শ্রী বকসি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সাথে কাটানো তার সময়ের কথা। যা তিনি ভাগ করে নেন আবৃত্তি কেন্দ্রের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার সাথেই । একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন দেবাশীষ চক্রবর্তী এবং স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন নিউ ব্যারাকপুর শহরের পরিচিত মুখ মেঘমালা বসু। একে একে গুরু বন্দনা করেন অবন্তিকা ও সেলিম দুরানি।পরে পরিবেশিত হয় কবিতার আলেখ্য এতো রক্ত কেনো। অনুষ্ঠানে উপস্থিত শ্রোতারাও সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান । আবৃত্তি কেন্দ্রের জন্মদিনে এইভাবেই স্মরনীয় হয়ে থাকলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়।