একটু পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি সম্পর্কে দু -চার কথা বলে রাখি। রবীন্দ্রনাথের ১২৫ তম জন্মবর্ষে ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ২০ মে প্রতিষ্ঠিত হয় পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি। রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের অধীনে। ১৯৯৪ সালে এটি একটি স্বশাসিত সংস্থার মর্যাদা পায়। প্রথম সভাপতি ছিলেন অন্নদাশঙ্কর রায়। অন্নদাশঙ্কর রায়ের পরে আকাদেমির সভাপতি হয়েছিলেন অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০২ সালে। কোন কাজ করতো আকাদেমি? বাংলা লিপি ও বানান সংস্কার , অভিধান রচনা , উপযুক্ত মানের পরিভাষাকোষ ও ব্যাকরণকোষ নির্মাণ , ভারতীয় ও বহির্বিশ্বের সাহিত্য অনুবাদ , বিশিষ্ট লেখকদের রচনাবলী প্রকাশ , মুখপত্র প্রকাশ , ছোটদের জন্যে বই লেখানো ,আলোচনাসভা , কবিতা উৎসব , লিটল ম্যাগাজিন মেলা আয়োজন করা ইত্যাদি প্রভৃতি ছিল আকাদেমির কাজ। গঠিত হয়েছিল একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার। দুর্দান্ত কিছু বই বের করেছিল আকাদেমি। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাবলী এবং নজরুল রচনাবলী তো অনেকেরই ঘরে আছে।
নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী আকাদেমির সভাপতি হয়েছিলেন। তখন বেশ কয়েকটা ভাল ভাল অভিধান বেরিয়েছে। ‘আকাদেমি বানান অভিধান’ প্রকাশিত হয়েছে। সেই বানানবিধিই এখন স্কুল পাঠ্যপুস্তকের অবলম্বন। অন্নদাশঙ্কর রায় (১৯৮৬-২০০২), অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় (২০০২-২০০৩) এবং নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী (২০০৩-২০১১) । এই যে মানুষজনের কথা বললাম এঁরা শাসকদল করতেন না। রাজনীতির মানুষ ছিলেন না। বিশ্বের বাঙালির কাছে এঁরা পরিচিত ছিলেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের দিকপাল হিসেবে। অবিসংবাদিত।
তারপরে সরকার বদলালো। আকাদেমি থেকে নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে সরিয়ে মহাশ্বেতা দেবীকে আনা হলো। তুলনা টানার প্রশ্ন ওঠেনা । বছরখানেকের মধ্যেই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন মহাশ্বেতা। নিজে থেকেই। সেটারও উপলক্ষ্য পুরস্কার। বিদ্যাসাগর পুরস্কার। উনি এবং ওঁর অধীনে নির্বাচন কমিটি যৌথ প্রাপক প্রস্তাব করেছিল। সরকার একজনের নাম কেটে দেয় । অপমানিত মহাশ্বেতা পদত্যাগ করেন। মাস পাঁচেক বোধহয় পদে ছিলেন। তারপর শাঁওলি মিত্র এলেন, মাঝে একবার পদত্যাগ করলেন ২০১৮ সালে কিন্তু রয়ে গেলেন আমৃত্যু । যেহেতু ওঁর সাহিত্যে ব্যুৎপত্তি নিয়ে আমার জানা নেই, কৃতি থিয়েটারের মানুষ বলেই জানি। এখন নতুন কমিটি। চেয়ারম্যান মন্ত্রী ব্রাত্য বসু।