নিজস্ব প্রতিবেদনঃ কৃষ্ণনগরে তৈরী হয়েছে জলঙ্গী নদী সমাজ ২ বছর যাবৎ তারা কাজ করে চলেছে নদী ও পরিবেশ নিয়ে, গ্রাম,শহরের জনমানুষকে একত্রিত করে নদী দূষণ ও বিভিন্ন বেআইনি দখলদারির বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন এরা। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে চলছে তাদের দাবী নিয়ে দরবার, তুলছে সোশ্যাল মিডিয়া তে তাদের দৃষ্টি নন্দন পোস্টের ঝড়, কিছুদিন আগে তাদের নদী বাঁধাল নিয়ে যে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতায় সেই জলঙ্গী নদীর ওপর থেকে বাঁধাল তুলে দেওয়া হয় এরফলে অসংখ্য মৎসজীবী উপকৃত হবেন। এই আন্দোলন একটা ইতিহাস রচনা করেছে পরিবেশ আন্দোলনের ক্ষেত্রে। এবার তারা কৃষ্ণনগরের নিজের নদী অঞ্জনার জন্য মাঠে নেমেছেন, ১৮ কিলোমিটার সাইকেল মিছিলের আয়োজন করেছিলেন সেই রবি ঠাকুরের কবিতার নদী অঞ্জনাকে বাঁচাতে। কৃষ্ণনগর স্টেডিয়ামের সামনে থেকে শুরু করে অঞ্জনা নদীর পাড় বরাবর এই সাইকেল মিছিল চলে দোগাছি গ্রাম ছড়িয়ে হাট বোয়ালিয়া গ্রামে গিয়ে সাময়িক বিরতির পর আবার কৃষ্ণনগর অবধি ১৮ কিলোমিটার তাদের দাবী নিয়ে সোচ্চার হোন। তাদের দাবি নদীকে বাঁচালেই হবে না পুকুর, খাল, বিল, জলাশয় কেউ সমান গুরুত্ব দিতে হবে। গঙ্গাকে অবিরল নির্মল ভাবে বৈতে দিতে হবে। জলঙ্গী নদী সমাজ সংগঠনের পক্ষে কৌশিক সরকার জানান আগামী দিনে পরিবেশ রাজনীতি মূলধারার রাজনীতিতে বিশেষ জায়গা স্থাপন করবে, কারণ নদী ও পরিবেশ সুস্থ্য না থাকলে মানুষ বাঁচবে না আর এই রাজনীতি মানুষের জন্যই সৃষ্টি, তাই নদী ও পরিবেশের অধিকারকে ফিরিয়ে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছেন একাধিক পরিবেশ প্রেমী মানুষ ও সংগঠন। যাদের মধ্যে বিশেষ উল্লেযোগ্য নদী বাঁচাও জীবন বাঁচাও (কলকাতা),পরিবেশ বান্ধব মঞ্চ (ব্যারাকপুর), কিশোর বাহিনী, কৃষ্ণনগর ঐক্যতান, এ.পি.ডি.আর (কৃষ্ণনগর), নগেন্দ্রনগর পরিবেশ মঞ্চ, আলিঙ্গন, ছাড়াও আরো বেশ কিছু সংগঠন। এছাড়াও কৃষ্ণনগর সদর পোষ্ট অফিস মোড়ে সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। এই ১৮ কিলোমিটার সাইকেল মিছিলে মহিলাদের উপস্থিতিও ছিলো চোখে পরার মতো।
জলঙ্গী নদী সমাজের এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে তাদের সাথে সাইকেল চালালেন সিপিআইএম নদীয়া জেলার সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ও প্রাক্তন বিধায়ক এস এম সাদী। এই কর্মসূচিকে আন্তরিক ভাবে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং পরিবেশ নিয়ে নদী নিয়ে এই ধরনের কাজে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানালেন শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শ্রী শিশির কর্মকার মহাশয়, এছাড়াও বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বিরোধী দলের পক্ষে শ্রী রঞ্জন অধিকারী মহাশয় সাধারণ সম্পাদক বিজেপি নদীয়া উত্তর জেলা তিনিও ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এই নদী ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা জলঙ্গী নদী সমাজ সংগঠনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং সকল জনমানবকে আগামীদিনে পরিবেশ ও নদী নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার জন্য আবেদন জানান। গৌতম বাবুর আয়োজনে ও উদ্যোগে জলঙ্গী নদী সমাজ সংগঠনের কর্মসূচী পালিত হয়। ইসকন মায়াপুরের থেকে শ্রী শান্ত গৌরাঙ্গ দাস বার্তা দেন পরিবেশকে রক্ষা করতে, নদীকে অবিরল প্রবাহ ফিরিয়ে দিতে মানুষকে আরো সজাগ ও সচেতন হতে হবে সেই সঙ্গে জলঙ্গী নদী সমাজের কর্মসূচির সাফল্যও কামনা করেন।
এখানেও জলঙ্গী নদী সমাজ সংগঠন পরিবেশ আন্দোলনের ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মূলধারার ৩ রাজনৈতিক দলগুলি কে এক ছাতার তলায় নিয়ে নদীকে বাঁচাতে সহমত পোষণ করলেন এবং ভবিষ্যতেও এই মহতী উদ্যোগের পাশে থাকার সম্মতি জানালেন।