গঙ্গার ভাঙ্গন, তাঁত শিল্প নিয়ে জগন্নাথ সরকারের কোন মাথা ব্যাথা নেই, তাকে বিভিন্ন হোটেল দেখা যায়, সাধারণ মানুষ সেটা জানে- মনোনয়ন জমা দিতে এসে এভাবেই রানাঘাটের বিদায়ী সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে কটাক্ষ তৃণমূল প্রার্থী ডা: মুকুট মনি অধিকারীর।


গোপাল বিশ্বাস, নদীয়া- বুধবার আবহাওয়ার উত্তাপকেও কার্যত পেছনে ফেলে ডা মুকুট মনি অধিকারীর মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে কর্মী সমর্থকদের উচ্ছাসে সরগরম হয়ে উঠেছিলো নদীয়ার জেলা সদর কৃষ্ণ নগরের রাজপথ। এদিন সকালে বাবা- মায়ের আশির্বাদ নিয়ে,, গৃহদেবতা ও স্থানীয় মন্দিরে পুজো দিয়ে মনোনয়ন জমার উদ্দেশ্য রওনা দেন তিনি। সেখানেও কর্মী সমর্থকদের উচ্ছাস ছিলো চোখে পড়ার মতো বেলা আনুমানিক এগারোটার পর কৃষ্ণ নগরের গভ: কলেজের ময়দানে জমায়েতে হয় ডা মুকুট মনি অধিকারী সহ বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য কর্মী সমর্থক, মতুয়া ভক্ত, পাগোল গোসাই, সহ একাধিক নেতৃত্ব। এক সুবিশাল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে কয়েক হাজার কর্মী সমর্থক সাথে নিয়ে এদিন জেলাশাসক দপ্তরে নমিনেশন জমা দিলেন রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমনি অধিকারী। প্রায় এক কিলোমিটার পথ এই শোভাযাত্রায় পায়ে হেটে জেলা শাসক দপ্তরে প্রবেশ করে মুকুটমণী অধিকারী, এদিন তার এই মনোনয়ন জমা কর্মসূচীতে পা মেলাতে দেখা গেলো তৃণমূলের নদীয়া দক্ষিনের সভাপতি,দেবাশীষ গাঙ্গুলি, ছিলেন জেলাপরিষদের সভাদিপতি তারান্নুম সুলতানা মীর , ছিলেন বিভিন্ন বিধায়ক,মন্ত্রী সহ একাধিক পৌর এলাকার পৌরপতি, জনপ্রতিনিধী সহ বিভিন্ন নেতৃত্ব। এ ছাড়াও এদিনের এই কর্মসূচীতে নবদ্বীপ সহ একাধিক এলাকার থেকে আসা মতুয়া ভক্তদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। এদিনের এই শোভাযাত্রার শুরুতেই ছিলো নবদ্বীপ ব্লকের থেকে আসা মতুয়াদের দল,এ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার মতুয়া ভক্ত সহ আদিবাসী নৃত্য, লোক নৃত্য সহ এক বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা। এদিন মতুয়াদের সাথে ডাংকা- ড্রাম বাজাতে দেখা গেল ডা মুকুট মনি অধিকারী, সহ শান্তি পুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীকেও। মতুয়াদের সাথে মিলে হরি চাঁদ, গুরু চাঁদ ঠাকুরের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে শোভাযাত্রার সিংহ ভাগ। সেখানেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ডা মুকুট মনি অধিকারী একাধারে যেমন এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন বাস্তবায়িত করার কথা বলেন, পাশাপাশি বিদায়ী সাংসদ জগন্নাথ সরকারকেও তীর্যক ভাষায় আক্রমণ করতে শোনা যায়।

তিনি জানান জয়ের বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী তিনি, পাশাপাশি জগন্নাথ সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন বীগত পাঁচ বছরে বঞ্চনার থেকে মুক্তি পাবে এবার রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন এদের গ্রহণযোগ্যতাই হারিয়েছে সমাজ থেকে, এলাকায় সাধারণ মানুষ, মহিলারা ভীতসন্ত্রস্ত থাকে সর্বদা এদের থেকে। এই রানাঘাট লোকসভার অন্তর্ভুক্ত শান্তি পুর, নবদ্বীপ সহ বিস্তর্ন এলাকার বড় সমস্যা গঙ্গা ভাঙ্গন, আর এদিন এ নিয়ে ডা মুকুট মনি অধিকারীকে প্রশ্ন করলে তিনি সরাসরি বলেন গঙ্গা ভাঙ্গন নিয়ে জগন্নাথ সরকারের কোন মাথা ব্যাথা নেই, তাকে বিভিন্ন হোটেলে দেখতে পাওয়া যায়, এটা সবাই জানে, সাথে তিনি আরও জানান আবির বিশ্বাস কিছুটা কাজ শুরু করেছিলো, বর্তমানে শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী সচেষ্ট হয়েছেন, আগামী দিনে আমি এটা নিয়ে গুরুত্ব সহকারে দেখবো। এছাড়াও তাত শিল্প নিয়েও জগন্নাথ সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, শান্তি পুর, আরবান্দি সহ বিভিন্ন এলাকার তাত শিল্প নিয়েও তার কোন আগ্রহ দেখা যায় নি, অথচ এলাকা গুলো তার বাড়ির কাছে, পাশাপাশি তিনি আরও বলেন শুধু তাত শিল্প নয় নদীয়ায় বিভিন্ন শিল্পের অগ্রগতির জন্য মূখ্য মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক সারে সাতশো কোটি টাকার বিনিয়োগ করিয়েছেন। যদিও শিক্ষক নিয়োগ দূর্নিতী সহ একাধিক প্রশ্নের জবাবে সু – কৌশলি ভাবে এরিয়ে যান তিনি। এ ছাড়াও নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক, মতুয়াদের সাথে যোগাযোগ আগামী দিনে একই থাকবে কিনা প্রশ্নে তিনি জানান মতুয়াদের সাথে শুধু নয় সকল মানুষের সাথে আমার সম্পর্ক রাজনীতির উর্দ্ধে, এছাড়াও আমি এটাও মনে করি রাজনীতির থেকেও সমাজনীতি, ধর্মনিতী,অনেক বড়, এবং আমরা সকলে আত্মিক, বন্ধনে জরিয়ে আছি। সব মিলিয়ে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের মতুয়া ভোট যেখানে তৃণমূল – বিজেপির পাখির চোখ, সেখানে এই দুই রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর মনোনয়ন কর্মসূচীতে যে ভাবে মতুয়াদের অংশগ্রহণ নজরে এসেছে তাতে ভোট বাক্সের সমীকরণ বোঝা এখনই যে খুব সহজ হবে না তা বলাই বাহুল্য।

About The Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights