গোপাল বিশ্বাস-নদীয়া- সকাল থেকেই কেও বলছে আমাকে চড় মেরেছে, কেও বলছে আমাকে কামড়ে দিয়েছে, তো কেউ বলছে ঘরের উঠোনেই আমাকে ধাক্কা মেরেছে। একের পর এক আসছে টোটো, মোটরবাইক, আর তাতে করেই আসছে ক্ষিপ্ত হনুমানের হাতে আক্রান্ত ব্যাক্তিরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এমনই ছবি দেখা মিললো নবদ্বীপ ব্লকের মহেশগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে। এবার এক ক্ষিপ্ত হনুমানের দাপটে আতংকিত গোটা এলাকা বাসী। হনুমানের আক্রমণে গুরুতর আহত প্রায় পনেরোজন। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত মোট আহতের সংখ্যা কমবেশি ৩০ থেকে চল্লিশ জন। হনুমানের আতংকে কার্যত গৃহবন্দী গোটা এলাকা বাসী।এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়ার নবদ্বীপ ব্লকের মাঝদিয়ার বিস্তির্ণ এলাকায়। স্থানীয় সুত্রে খবর, বুধবার থেকে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে একটি হনুমান। কখনো এ পাড়ায় তো কখনো ও পাড়ায়। আর এই হনুমান যাকে পারছে তাকেই করছে আক্রমণ। মাঝদিয়ার বাসিন্দা ফুলটুসি হালদার জানান বুধবার বিকেল আনুমানিক পাঁচটা নাগাদ আমি পাড়াতেই ছিলাম পাসের বাড়ির টালির চালে বসে একটি হনুমান কিছু একাটা খাচ্ছিলো হঠাৎ করেই আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় আমি পরে যাই, তাতে আঘাত আসে মাথায়, তৎক্ষণাৎ প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় মহেশগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মাথায় দুটি সেলাই হয় বলেও জানায়। মাঝদিযা বেলডাঙ্গা স্কুল মাঠ এলাকার বাসিন্দা গৌরাঙ্গ দেবনাথ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক পৌনে দশটা নাগাদ বাজারে যাবো বলে বেরোচ্ছি হঠাৎ একটা হনুমান এসে আমার ওপর আক্রমণ করে, বাম হাতে দেয় একাধিক কামড়, এমনকি শরীরের মাংসও তুলে নেয় বলে তিনি জানান।
তৎক্ষণাৎ তিনিও যান মহেশগঞ্জ গ্রামীন হাসপাতালে, সেখানে গেলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা করে পরে বেলা বারোটা নাগাত যেতে বললে তিমি যান তখন তাকে ভ্যাকসিন সহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করা হয়। পেশায় হোটেলে রাঁধুনির কাজ করেন, গৌরাঙ্গ দেবনাথ, এই ঘটনার পর একাধারে যেমন শারীরিক অসুস্থ পাশাপাশি তিনি আরও জানান কাজে পারবোনা ক‘দিন, এদিকে ওষুধও কিনতে হলো বাইরে থেকে, হঠাৎ করে এমন বিপদ কেন যে হলো, এই ঘটনায় কার্যত দিশেহারা পরিস্থিতি তার। ঐ এলাকার গৃহবধূ সর্মিষ্ঠা দেবনাথ জানান বুধবার থেকেই গোটা মাঝদিয়া এলাকায় একটি হনুমান দাপিয়ে বেরাচ্ছে, শুনেছি, বুধবারও বেশ কয়েকজনকে আক্রমণ করেছে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই আমদের এলাকায় শুরু করেছে, এদিন সকালে আমি ঘরের দরজার সামনেই ছিলাম হঠাৎ করে পাসের বাড়ির ছাদ থেকে হনুমানটি এসে আমার ওপর ঝাপিয়ে পরে,আমার পিঠে, ঘারে একাধিক আঘাত করে, এলাকার সবাই লাঠি নিয়ে তারা করলে পালিয়ে যায় আমিও ঘরে চলে যাই, পরবর্তী সময়ে স্থানীয় হাসপাতালে গিয়ে প্রয়জনীয় চিকিৎসা করাই, গোটা এলাকায় যেন চলছে কার্ফু, সিংহ ভগ মানুষ গৃহবন্দী, সকলেই জানাল দিয়ে দেখছে, মাঝদরিয়া এলাকার বাসিন্দা রাজকুমার হালদার জানান, বুধবার থেকে এই ক্ষিপ্ত হনুমানের আতংকে আতঙ্কিত গোটা এলাকায়। তিনি আরও বলেন বুধবারই বনদপ্তরে খবর দিলে তারা আসেন কিন্তু কোন লাভ হয়নি বৃহস্পতিবারও সকাল থেকেই হনুমানের আক্রমণ শুরু হলে পুনরায় বন দপ্তরের কর্মীরা আসে ও একাধিক বার চেষ্টা করে, পাতা হয় ফাদ ও কিন্তু সে হনুমানকে কোন ভাবেই করা যায় নি জব্দ। রাজকুমার বাবু আরও জানান বৃহস্পতিবার বেলা আনুমানিক একটা পর্যন্ত বনদপ্তরের কর্মীরা জানান তাদর চেষ্টা করেন কিন্তু এতে হবেনা, তারা তাদের ইলউর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে জানাবে তার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারবে বলে বৃহস্পতিবার এলাকা ছাড়েন বনদপ্তরের কর্মীরা। এলাকায় চলছে হনুমানের দাপট! হনুমানকে তারাতে এলাকায় স্তানীয়রাও লাঠি হাতে টহল দিচ্ছে গোটা সময়। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটের পরও হনুমানের হাতে আক্রান্ত হয় একাধিক ব্যাক্তি। মোটের ওপর এখন এই ক্ষিপ্ত হনুমানই যে আতংকের ও ত্রাশ এর অপর নাম হয়ে উঠেছে নবদ্বীপ ব্লকের মাঝদরিয়া এর গোটা এলাকায় তা বলাই বাহুল্য।