গোপাল বিশ্বাস,নদীয়া – বর্তমান আবহাওয়ার দাবদাহে যেখানে সকলেই বেশি করে বৃক্ষ রোপণের বার্তা দিচ্ছে, ও গাছ কাটার বিরুদ্ধে গর্জে উঠছে, সেখানে নদীয়ায় উলোট পুরান। গাছ কাটার দাবীতেই শুরু হলো বিক্ষোভ! আর শুধু বিক্ষোভ নয় রিতীমত পূর্ত দপ্তর (সড়ক) অফিসে তালা ঝুলিয়েই চললো বিক্ষোভ। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার নদীয়ার রানাঘাট রানাঘাটের পূর্ত দপ্তর (সড়ক) অফিসে। আর এদিন এই অফিসে তালা ঝুলিয়ে গাছ কাটার দাবী পুরনের জন্য বিক্ষোভে সামিল হয় শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি চঞ্চল চক্রবর্তী সহ পঞ্চায়েতের বিভিন্ন আধিকারিকরা সহ গ্রামবাসীরা। কিন্তু কেন এই বিক্ষোভ, প্রশ্নের উত্তরে চঞ্চল বাবু জানান নদীয়ার ফুলিয়া স্টেশন রোডের দুপাশে রয়েছে প্রায় কুড়িটি গাছ, যেগুলো বর্তমানে মৃতপ্রায় অবস্থা। আর এই গাছের ছোট বড় ডাল ভেঙে পরে যখন তখন,ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় টোটো চাল, বাইক আরোহী থেকে স্থানীয় বয়াবসায়ীও সাধারণ মানুষ সকলের। পূর্ত দপ্তরকে বারবার জানানো সত্বেত্ত কাটার কোন ব্যাবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না এই ভাবে বিপজ্জনক ভাবে থাকা গাছ গুলো। এ ছাড়াও এই গাছগুলোর বয়স প্রায় ৬০-৭০ বছর কিন্তু আমরা লক্ষ্য করি হঠাৎ করেই এক সাথেই এই সব গাছগুলো মৃত্যু হয়, আমরা এর তদন্তেরও দাবী জানাচ্ছি। আর তাই শুক্রবার দুপুরে নদীয়ার রানাঘাট মিশন রোডের পাশে থাকা পূর্ত দপ্তরের অফিসে বিক্ষোভে সামিল। যদিও এদিন, পূর্ত দপ্তর সড়ক বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সে সময় অফিসে উপস্থিত না থাকায় জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার সহ অন্যান্য কর্মচারীদের সাথে কথা বলেন এবং গাছ কাটার বিষয়ে তারা কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি, বলেও দাবী করেন চঞ্চল বাবি। এর পরেই জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ারের ঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে শুরু হয় অবস্থান বিক্ষোভ, পাশাপাশি এদিন বিক্ষোভ কারীরা জানায় যতক্ষণ না পর্যন্ত পূর্ত দপ্তর গাছ কাটার বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত না জানায়,ততোক্ষন অবস্থান বিক্ষোভ জারি থাকবে।
ফুলিয়া স্টেশন রোডের এক ব্যাবসায়ী গৌতম বসাক জানান এই গাছ গুলো বর্তমানে বিপজ্জনক ভাবে রয়েছে এটা সত্যি, তিনি আরও জানান গত দের বছর আগে ফুলিয়া হাসপাতাল এলাকার এক ব্যাক্তির মৃত্যুও হয়েছিল এই গাছের ডাল পরে, পাশাপাশি তিনি আরও বলেন বর্তমানে গাছের ডাল, গাছের বড় বড় ছাল ভেঙে পরে, তাতে ছোটখাটো ক্ষতি হয় সকলের, কিন্তু ব্রসর বিপদও যখন তখন ঘটতে পারে। তিনি আরও জানান বিগত দিনে এই এলাকার ব্যাবসায়ীরা বিডিও এর কাছে লিখিত জানামো হয়েছিল পরে বনদপ্তর থেকে দুবার লোকজন এসেছিল কিন্তু সমাধান কিছুই হয়নি, ঐ ব্যাবসায়ীও দাবী করেন এই গাছ গুলোর বয়স ৬০-৭০ বছর কিন্তু যতদুর আমরা জানি এই গাছগুলোর আয়ু আরও বেশি, কিন্তু হঠাৎ করেই একসাথে এই ২০-২৫ টা গাছ কিভাবে মরলো তারও তদন্ত হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে শান্তিপুর ভিডিও সন্দীপ ঘোষ নিজেও তা স্বীকার করে নিলেন, যে বিপদজনক অবস্থায় রয়েছে তবে , এ বিষয়ে PWD ও বনদপ্তর দুইপক্ষকে জানানো হয়েছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গাছগুলোকে কেটে ফেলার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে । তবে শুধু তাই নয় গাছগুলোকে কেটে ফেলা হলে পুনরায় ফের নতুন করে আবার গাছ লাগানো হবে বলেও জানান তিনি। ফুলিয়া স্টেশন রোড ধরেই রয়েছে হাসপাতাল বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অফিস থেকে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মোটের ওপর ফুলিয়ার অন্যতম প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এটি আর, একসময়ের শান্তির ছায়া দেওয়া এই রাস্তার দুধারে থাকা অসংখ্য গাছই আজ স্থানীয় দের কাছে আতংকের কারন হয়ে উঠেছে, তবে কবে এই সমস্যার সমাধান হয় সেটাই দেখা সময়ের অপেক্ষা।