কলকাতা – ১২ই নভেম্বর সারা বিশ্ব জুড়েপালন করা হয় বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস, যা নিউমোনিয়ার মোকাবেলায় বিশ্বজুড়ে সচেতনতা বৃদ্ধির এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। নিউমোনিয়া একটি প্রতিরোধযোগ্য এবং চিকিৎসাযোগ্য অসুখ, যা এখনও পাঁচ বছরের নিচের শিশু এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে অসুস্থতা ও মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। সময়মত সচেতনতা, কার্যকর প্রতিরোধ এবং প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে নিউমোনিয়ার প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
নিউমোনিয়া একটি শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, যা এক বা উভয় ফুসফুসের বায়ুথলিগুলিকে প্রদাহিত করে এবং চিকিৎসার অভাবে গুরুতর জটিলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। এর লক্ষণগুলির মধ্যে কাশি, জ্বর, ঠান্ডা লাগা এবং শ্বাসকষ্ট রয়েছে, যা দ্রুত তীব্র আকার নিতে পারে। ডাঃ সুজন বর্ধন, কনসালট্যান্ট, পালমোনোলজি, নারায়ণা হাসপাতাল, আরএন টেগোর হাসপাতাল, মুকুন্দপুর, ব্যাখ্যা করেছেন, “নিউমোনিয়া দ্রুত বিকাশ লাভ করতে পারে, বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর মধ্যে। লক্ষণগুলি প্রথমেই চিনতে পারা এবং সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া গুরুতর ফলাফল প্রতিরোধ এবং সুস্থতার সম্ভাবনা বাড়াতে সহায়ক।”
নিউমোনিয়া একটি শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ রোগ, যা একটি বা একসাথে দুটি ফুসফুসের বায়ুথলিগুলিকে প্রভাবিত করে এবং অবহেলিত থাকলে গুরুতর জটিলতার দিকে গড়াতে পারে। নিউমোনিয়ার সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে কাশি, জ্বর, ঠাণ্ডা এবং শ্বাসকষ্ট অন্তর্ভুক্ত, যা দ্রুততর হতে পারে। এই লক্ষণগুলি প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা গেলে, গুরুতর পরিস্থিতি প্রতিরোধ করা এবং ফলাফল উন্নত করা যায়।
ডাঃ অনির্বাণ কর্মকার, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন, নারায়ণা হাসপাতাল, হাওড়া, জোর দিয়ে বলেছেন, “নিউমোনিয়ার প্রধান লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী কাশি, শ্বাসকষ্ট বা দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস, জ্বর এবং শ্বাস নেওয়া বা কাশির সময় বুকের ব্যথা। নিউমোনিয়ার লক্ষণগুলি দ্রুত শনাক্ত ও স্বীকৃতি দিয়ে সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে ভালো ফল পাওয়া যায় এবং বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে গুরুতর জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। এটি একটি নিরাময়যোগ্য সংক্রামক রোগ, যা সমন্বিত স্বাস্থ্যসেবা এবং আরও ভালো সচেতনতার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়। টিকাকরণ, সঠিক পুষ্টি, দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং ভিড় এড়ানোর মাধ্যমে এই রোগের বোঝা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।”
নিউমোনিয়া প্রতিরোধে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ রয়েছে, যা সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। টিকাকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে বিশেষ করে শিশুরা, বয়স্করা এবং দুর্বল প্রতিরোধ ব্যবস্থার অধিকারী ব্যক্তিদের জন্য নিউমোকোকাল এবং ফ্লু টিকা গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত হাত ধোয়ার মাধ্যমে ভালো হাইজিন বজায় রাখলে নিউমোনিয়া ঘটানো জীবাণুর সংস্পর্শ এড়ানো যায়। ধূমপান থেকে বিরত থাকাও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ধূমপান ফুসফুসের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া, স্বাস্থ্যকর জীবনধারা—যেমন সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম—একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে এবং নিউমোনিয়া থেকে সুরক্ষা দেয়।
প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্তকরণ কার্যকর চিকিৎসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকরা নিউমোনিয়ার কারণ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ বা সহায়ক চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারেন। গুরুতর ক্ষেত্রে, অক্সিজেন থেরাপি এবং নিবিড় পরিচর্যার জন্য হাসপাতালে ভর্তি প্রয়োজন হতে পারে।
এই বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবসে আসুন, আমরা সকলেই একত্রিত হই এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করি, প্রতিরোধমূলক যত্নকে উৎসাহিত করি এবং প্রাথমিক চিকিৎসার সহায়তা প্রদান করি, যাতে আমাদের সমাজে নিউমোনিয়ার বোঝা কমানো সম্ভব হয়।