ভরতপুরে বোমাবাজি! তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে আহত কমপক্ষে ১০ জন! আতঙ্কে ঘরছাড়া বহু!


রাজেন্দ্র নাথ দত্ত:মুর্শিদাবাদ : মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দী মহকুমার ভরতপুর এলাকা তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল । শনিবার সকালে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা শুরু হয়। ক্রমে তা বড় আকার নেয় বোমাবাজিশুরু হয়। বোমার আঘাতে অন্তত ১০ জন জখম হয়েছেন বলে খবর। আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন অনেকে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিলেও এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে।ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের অনুগামীদের সঙ্গে ব্লক সভাপতি নজরুল ইসলাম ওরফে টারজানের অনুগামীদের সংঘর্ষে শনিবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। স্থানীয় সূত্রে খবর, সরডাঙ্গা বিন্দারপুর গ্রামে এক পক্ষের ছাগল অন্য পক্ষের ফসল খেয়ে নেওয়া নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। প্রাথমিক ভাবে তর্কাতর্কি শুরু হয়েছিল। ক্রমে তা হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছে যায়। আচমকা এলাকায় শুরু হয় বোমাবাজি। অভিযোগ, ব্লক সভাপতির অনুগামীরা বিধায়কের অনুগামীদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়েন। এতে বিধায়ক অনুগামী মহিলা, বৃদ্ধ-সহ ১০ জন জখম হন। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
আহতদের দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিট না-পাওয়া নিয়ে হুমায়ুনের অনুগামীদের সঙ্গে ব্লক সভাপতির অনুগামীদের ঝামেলা শুরু হয়েছিল। বিধায়কের নির্দেশেই তাঁরা নির্দলের টিকিটে ভোটে লড়েছিলেন। ভোট মিটে যাওয়ার পর আবার তৃণমূলে যোগ দেন বিধায়কের হাত ধরে। কিন্তু ব্লক সভাপতি টারজানের লোকজন সেই থেকে তাঁদের নানা ভাবে হেনস্থা করছেন বলে অভিযোগ। শনিবার সেই গোলমাল বড় আকার নিয়েছে।
বোমাবাজির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল ভরতপুর থানার পুলিশ। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে এলাকায় অশান্তি ছড়াচ্ছে। মানুষ আতঙ্কিত। এলাকায় ভয়মুক্ত পরিবেশ স্থাপনের আবেদন জানিয়েছে তারা। এলাকার বিজেপি নেতা শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘তৃণমূলের সব গোষ্ঠীর হাতেই প্রচুর পরিমাণে বেআইনি অস্ত্র রয়েছে। আগামী নির্বাচনে সেই সব অস্ত্র তারা ব্যবহার করবে। নির্বাচন কমিশন উদ্যোগী হয়ে অস্ত্র উদ্ধারের ব্যবস্থা করুক।’’শনিবারের ঘটনায় আহত এক তৃণমূল কর্মী মার্জিনা বেওয়া বলেন, ‘‘আমরা বিধায়কের লোক। দলের টিকিট না পাওয়ায় বিধায়কের নির্দেশে নির্দলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলাম। আমাদের বাড়ির লোক ভোটে জেতে। তার পর থেকেই টারজানের লোকজনের আক্রোশ আমাদের উপরে। বিনা কারণে ওরা আমাদের বাড়ির সকলকে খুন করার চেষ্টা করছে।’’তবে গোষ্ঠী সংঘর্ষের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সাংগঠনিক সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘গ্রাম্য বিবাদ নিয়ে গন্ডগোল। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’’

About The Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights