আর.জি.করের সঞ্জয় আর ধনঞ্জয়ের তুলনায় তীব্র ক্ষোভ ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচার মঞ্চের, মানহানি মামলা করার প্রস্তুতি


কিছু সংবাদ মাধ্যমে আর.জি.করের সঞ্জয় রায় আর ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে তুলনা করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচার মঞ্চের কনভেনর ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামী। ওনার স্পষ্ট বক্তব্য সঞ্জয় আর ধনঞ্জয়ের মধ্যে শুধুমাত্র নামের মিল থাকায় যারা তুলনা টেনে টি.আর.পি. এনজয় করছেন তারা আসলে ভাবের ঘরে চুরি করছেন। তথ্যপ্রমাণ এবং অধ্যয়ন বলছে হেঁতাল পারেখ খুনের ঘটনায় মূল অপরাধীকে আড়াল করতে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে ফাঁসানো হয়েছিল । এই ঘটনার আগে ধনঞ্জয় বা ওনার পরিবারের কোন সদস্যের বিরুদ্ধে কোন অপরাধ মূলক ঘটনায় যুক্ত থাকার কোন প্রমাণও নেই। কিন্তু আর.জি.কর. হাসপাতালে ডাক্তার তিলোত্তমার খুন ও ধর্ষণে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় সম্পূর্ণ নির্দোষ এই রকম ন্যারেটিভ যারা স্থাপন করতে চাইছেন তাদের জেনে রাখা প্রয়োজন কলকাতা পুলিশ এবং সি.বি.আই. উভয়ের প্রারম্ভিক সমস্ত প্রমাণ বলছে এই জঘন্য অপরাধে সঞ্জয় অপরাধী। প্রশ্ন হচ্ছে সঞ্জয় একা দোষী নাকি আরো অনেকে এই নৃশংস ঘটনার সাথে যুক্ত সেই বিষয়ে নিশ্চই তদন্ত চলতে পারে। কিন্তু এর থেকে কোথাও প্রমাণিত হয়না যে সঞ্জয়কেও ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের মত বলীর পাঁঠা করা হচ্ছে । তিনি আরো বলেন পৃথিবীর কোন নৃশংস হত্যা, ধর্ষণ বা জিঘাংসার মধ্যে তুলনা টানা উচিৎ নয়। অপরাধ আজ থেকে তিন মাস আগে হোক বা চৌত্রিশ বছর আগে, সবগুলোই মানবতার লজ্জা । কিন্তু তবুও যদি জোর করে ডাক্তার তিলোত্তমা হত্যাকাণ্ডের সাথে হেঁতাল পারেখ হত্যাকাণ্ডের সম্পর্ক স্থাপন করা হয় তাহলে বলবো ডাক্তার তিলোত্তমার মতই নৃশংস ভাবে খুন হয়েছিলেন হেঁতাল দেবী। কিন্তু সেখানে ওনার হত্যাকারীকে আড়াল করতে গিয়ে নিরপরাধ দরিদ্র পুরোহিত ঘরের সন্তান ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় ধনঞ্জয় অপরাধী না হলে তাকে ফাঁসি দিতে গিয়ে ফাঁসুড়ে নাটা মল্লিককে দিয়ে সিস্টেম একটি খুন করানোর মত জঘন্য অপরাধ করেছে । যেখানে নাটা মল্লিকের কোন দোষ ছিলনা । অর্থাৎ এই ঘটনায় ডাক্তার তিলোত্তমার হত্যাকাণ্ডের চেয়েও অনেক বেশী অপরাধ হয়েছে বলে মনে হয় । এরই সাথে মঞ্চের কনভেনর ডক্টর চন্দ্রচূড় গোস্বামীর বক্তব্য দুই মঞ্চের তথাকথিত আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যেও সম্ভবত পার্থক্য রয়েছে । আমরা সবাই চাই ডাক্তার তিলোত্তমার খুনীদের যেন ফাঁসি হয় এবং উনি যেন বিচার পান । কিন্তু তার নামে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার সুযোগ নিয়ে অবৈধ ভাবে গদি দখল এবং অর্থ উপার্জনের খেলায় নেমেছে। নিজেদের আখের গোছানোর নেশায় বুঁদ হয়ে এরা আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে একাধিক দফা দাবী আদায় করতে গিয়ে মূল আন্দোলনকেই দফারফা করেছে বা আন্দোলনের অপমৃত্যু ঘটিয়েছে। কিন্তু ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় মামলা পুনর্বিচার মঞ্চ মূল একটি বিষয়েই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে আছে যে জনতার আদালত এবং আইনি প্রক্রিয়ায় ধনঞ্জয়কে নির্দোষ প্রমাণ করে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়, হেঁতাল পারেখ এবং নাটা মল্লিককে প্রকৃত জাস্টিস দেওয়া হবে । কাউকে প্রাণদণ্ডের মত সাজা দেওয়ার আগে বিচার ব্যবস্থাকে আরও বেশি ত্রুটিহীন, নিরপেক্ষ এবং সংবেদনশীল করা আমাদের সকলের মূল উদ্দেশ্য। এই মঞ্চে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক বিশ্বাস নির্বিশেষে সবাইকে স্বাগত । আমরা আন্তরিকতার সাথে ঘোষণা করছি রাজনৈতিক মতাদর্শ যার যার কিন্তু এই মঞ্চ সবার । কারণ দিনের শেষে আমরা সবাই চাই একটি ত্রুটিহীন বিচার ব্যবস্থা এবং অপরাধহীন সমাজ ব্যবস্থা স্থাপন করতে যাতে ভবিষ্যতে আর কাউকে ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় না হতে হয় ।

About The Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights