কচিকাঁচাদের হাত ধরে পরিবেশ রক্ষায় ‘সিনির’ অভিনব উদ্যোগ গাছের জন্মদিন পালন…


কলকাতা, ৫ই জুনঃ “প্লাস্টিকের বর্জন” থিমকে সামনে রেখে এ বছর গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে নিয়ে উদযাপিত হল বিশ্ব পরিবেশ দিবস। ‘চাইল্ড ইন নিড ইন্সটিটিউট’ (CINI)-এর নেতৃত্বে সুন্দারবন থেকে শুরু করে দার্জিলিং পর্যন্ত বিভিন্ন জেলায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উঠে এল পরিবেশ রক্ষায় শিশুদের সক্রিয় অংশগ্রহণের এক অনন্য বার্তা। সুন্দরবনের কুলতলিতে ছোট ছোট শিশুরাই অনুষ্ঠানের মূল দায়িত্বে ছিল। সকাল সাড়ে সাতটা থেকেই শুরু হয় অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি। এখানে অংশ নেয় একশোর বেশি শিশু, মা এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। বিশেষ আকর্ষণ ছিল গত বছর রোপণ করা গাছগুলোর “জন্মদিন” পালন — কেক কেটে! গাছকে সন্তানের মতো যত্ন করে লালন-পালনের এই ভাবনাটি শিশুদের মধ্যে গাছের প্রতি দায়িত্ববোধ ও ভালোবাসা গড়ে তোলে।

দার্জিলিং জলপাইগুড়ি,মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ দিনাজপুরেও বিভিন্ন অঞ্চলে চারাগাছ বিতরণ এবং পরিবেশ বিষয়ক আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। কলকাতায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিগুণা সেন অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয় থিয়েটার ওয়ার্কশপ এবং চিত্র প্রদর্শনী। এখানে শিশুরা তাদের শিল্পীসত্তা দিয়ে তুলে ধরে কিভাবে প্লাস্টিক দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন তাদের জীবনে প্রভাব ফেলছে। আয়লা-আম্ফান সহ সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার কারণে জলবাহিত দুর্ঘটনা যেমন ডুবে মৃত্যু বেড়েছে, তার মূল কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয় অতিরিক্ত প্লাস্টিক ব্যবহার এবং জলবায়ুর অবনতি। সিনির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিশুদের হাত ধরেই যদি সচেতনতার বীজ রোপণ করা যায়, আগামী প্রজন্ম পরিবেশ রক্ষার সৈনিক হয়ে উঠবে। এদিনের অনুষ্ঠানগুলোই তার প্রমাণ — শিশুরাই হয়ে উঠেছে পরিবেশ রক্ষার মুখ। সিনিয়র ম্যানেজার সুজয় রায় জানান যে “পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের মধ্যে অদৃশ্য কিন্তু গভীর সম্পর্ক রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা ও প্লাবনের ঝুঁকি যেমন বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে শিশুদের ডুবে মৃত্যুর হার। সুস্থ পরিবেশ মানেই নিরাপদ স্বাস্থ্য ও শিশুর জীবন সুরক্ষা। পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যজুড়ে সবুজায়নের জন্য একাধিক প্রশংসনীয় ও ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, যার ফলে পশ্চিমবঙ্গ ক্রমশ আরও সবুজ ও পরিবেশবান্ধব রাজ্যে রূপ নিচ্ছে। সরকার ও নাগরিক সমাজ একসঙ্গে কাজ করলে পরিবেশ সুরক্ষার লড়াই আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এই রকম উদ্যোগে সবুজ হোক ভবিষ্যৎ, শিশুদের হাতে গড়ে উঠুক আগামী পৃথিবী।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights