এটিএম ফিরিয়ে দিল মঙ্গলকোটের ‘নিখোঁজ’ যুবক কে!


পারিজাত মোল্লা, টানা তিনবছর নিখোঁজ ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের বরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ আজাহার উদ্দিন নামে এক যুবক। পেশায় রাজমিস্ত্রী আজাহারের নিখোঁজে উদ্বিগ্ন ছিলেন তার স্ত্রী – সন্তান – দাদা সহ আত্মীয় পরিজন। বহু খোজাখুজি করার পর নিখোঁজ যুবকের দাদা খোদাদাদ হোসেন গত বছর মঙ্গলকোট থানায় মিসিং ডায়েরি করেছিলেন। জীবিত না মৃত? কি অবস্থায় রয়েছে? তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ছিল গোটা পরিবার । ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে এক মাস আগে নিখোঁজ যুবক নামাঙ্কিত এক এটিএম কার্ড আসে মঙ্গলকোটের বাড়ির ঠিকানায়। যা দেখে হতবাক হয়ে মঙ্গলকোট পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে এই পারিবার। মঙ্গলকোট আইসি মধুসূদন ঘোষের নির্দেশ অনুযায়ী থানার মেজবাবু বিবেক মুদি এই নিখোঁজ কান্ডে পুনরায় তদন্তে নামেন। সুত্র ওই এটিএম কার্ড। জানা যায় ওই এটিএম কার্ডটি পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের গোধুলি ব্রাঞ্চের। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের সাথে যোগাযোগ করে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। এরপর একাউন্ট নাম্বারের বিস্তারিত তথ্যে মোবাইল নাম্বার, পরিচয়পত্র গুলি জানেন তদন্তে থাকা পুলিশ অফিসার বিবেক মুদি। এরপর কল হিস্ট্রি তারপর মোবাইল টাওয়ার লোকেশন দেখে নিশ্চিত হয় যে, মঙ্গলকোটের নিখোঁজ যুবকই আত্মগোপন করে আসানসোলের গুরুনানক পল্লিতে রয়েছে। দাম্পত্য কলহ জনিত কারণে স্ত্রী – সন্তান সহ পরিবারকে রেখে নিরুদ্দেশ হয়েছিল সে। এরপর গত ১৯ জুলাই এটিএম কার্ড দেওয়ার নাম করে আসানসোলের এক ডাকঘরের সামনে আজাহারকে ডাকা হয়। এটিএম কার্ড নিতে এসে পুলিশের হাতে পাকরাও হয় সে। শুক্রবার রাতে মঙ্গলকোট থানায় পরিবারের হাতে আজাহারকে তুলে দেয় পুলিশ। অপরদিকে শুক্রবার গভীর রাতে মঙ্গলকোটের নুতনহাট – কাশেমনগর সড়কপথে টহল দেওয়ার সময় কোগ্রাম সংলগ্ন আড়াল বাস স্টপেজে একদল সশস্ত্র দুস্কৃতিদের দেখতে পায় পুলিশ। সাব ইন্সপেক্টর প্রশান্ত প্রামাণিক, এ এস আই দিলীপ ভুক্তা সহ অন্যান্য পুলিশ কর্মীরা ওই দুস্কৃতিদের তাড়া করে। বেশ কয়েকজন পালিয়ে গেলেও এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। ধৃতদের কাছে তলোয়ার, শাবল, লাঠি পাওয়া গেছে। শনিবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে এসিজেম এজলাসে পেশ করা হলে ধৃতদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষ জানিয়েছেন – ” ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ওই দলের বাকিদের সন্ধান চলছে”। স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বিগত ছয় মাসে অপরাধ দমনে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ একের পর এক নজিরবিহীন সাফল্য পেয়েছে। সে দুস্পাপ্য প্রাচীনকালের মূর্তি উদ্ধার করা হোক, কিংবা কয়েক ঘন্টা আগে চুরি হয়ে যাওয়া চারচাকা গাড়ি উদ্ধার করা হোক।কুড়ির কাছাকাছি হারিয়ে যাওয়া মোবাইল প্রকৃত মালিকদের কাছে পৌঁছে দিয়েছে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ।

About The Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights