কলকাতা। ইনস্টিটিউট অফ কনটেম্পোরারি ইন্ডিয়ান আর্ট (ICIA), আস্তাগুরু-র সহযোগিতায়, গর্বের সঙ্গে উপস্থাপন করল ‘দ্য শ্যাডোজ অব অ্যাবসেন্স’ – খ্যাতনামা শিল্পী টম ভট্টাকুঝির প্রথম একক শিল্পপ্রদর্শনী হয়েছে ভারতে। প্রদর্শনীটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল কলকাতার বীরলা অ্যাকাডেমি অফ আর্ট অ্যান্ড কালচারে, ১১ থেকে ২০ জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত। যাঁরা টমের শিল্পকর্ম দীর্ঘদিন ধরে অনুসরণ করেছেন—সাহিত্য পত্রিকায় তাঁর আবেগময় চিত্রায়ণ থেকে শুরু করে ইন্ডিয়া আর্ট ফেয়ার বা কোচি বিয়েনালের প্যাভিলিয়নে তাঁর সাম্প্রতিক উপস্থিতি—তাঁদের কাছে এই প্রদর্শনীটি একটি বহুপ্রতীক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
কেরালায় জন্ম, শান্তিনিকেতন ও বড়োদা-তে শিক্ষা এবং বিদেশে দীর্ঘ সময় কাটানো টম ভট্টাকুঝির শিল্পজীবন সাহিত্য, মানবতাবাদ এবং সমাজচেতনার দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত।তাঁর আলোকোজ্জ্বল অথচ সংযত চিত্রভাষা একদিকে যেমন রেনেসাঁ যুগের বাস্তববাদের কৌশল বহন করে, তেমনি তাতে থাকে সূক্ষ্ম স্যুররিয়াল উপাদান ও কেরালার গৃহজীবনের অন্তরঙ্গ নির্জনতা। এই প্রদর্শনীর বিশেষত্ব ছিল তাঁর সাম্প্রতিক ১৬টি মূল শিল্পকর্মের একত্র উপস্থিতি, যেগুলি এর আগে ভারতে কখনও দেখানো হয়নি। এই চিত্রগুলির মাধ্যমে দর্শকরা টমের শিল্পচর্চার আবেগপ্রবণতা ও গঠনশৈলী উভয়ের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ সংযোগ স্থাপন করতে পেরেছেন। তাঁর শিল্পকর্মে ফুটে উঠেছে ব্যক্তিগত স্মৃতি ও সামাজিক ইতিহাস—বিশেষ করে পরিবর্তিত কেরালার প্রেক্ষাপটে। যখন চিত্রকলার গুরুত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ডিজিটাল যুগে, তখন ‘দ্য শ্যাডোজ অব অ্যাবসেন্স’ নিঃশব্দে কিন্তু দৃঢ়ভাবে প্রমাণ করেছে এই মাধ্যমের গভীরতা ও প্রাসঙ্গিকতা। প্রখ্যাত শিল্পবিদ অধ্যাপক আর. শিবকুমার বলেছেন – “টম ভট্টাকুঝি একজন ব্যতিক্রমী শিল্পী, তিনি পরিচিত বাস্তব জগৎকে এমনভাবে চিত্রিত করেন যা অতীতের পাশ্চাত্য শিল্পীদের স্মরণ করায়, কিন্তু তাঁর চেতনা একেবারে আধুনিক।” এই প্রদর্শনী তাঁর শিল্পযাত্রায় একটি স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে রইল। এই প্রদর্শনীটি কিউরেট করেছেন বিশিষ্ট শিল্পতত্ত্ববিদ প্রফেসর আর. শিবকুমার, যিনি সংবেদনশীলভাবে টমের কাজকে বৃহত্তর শিল্প ও সংস্কৃতি ইতিহাসের প্রেক্ষিতে উপস্থাপন করেছেন, আবার একই সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত ভাবনার গভীরতাকেও গুরুত্ব দিয়েছেন।