রাজেন্দ্র নাথ দত্ত: মুর্শিদাবাদ: মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুরে দমকল কেন্দ্র গড়ে ওঠার ফল পেল শহরবাসী। মঙ্গলবার রঘুনাথগঞ্জে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি বন্ধ থাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিল্ডিংয়ে অগ্নিকাণ্ডের খবর মিলতেই মিনিট দশেকের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছল দমকলের গাড়ি। ফলে বড়সড় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে আগুন পাশের বিল্ডিংয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারত, তেমনটাই আশঙ্কা এলাকাবাসীর। ঘটনাস্থলের আশপাশে একাধিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সহ একটি বেসরকারি হাসপাতাল ছিল। দমকল কর্মীরা তৎপরতার সঙ্গেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। দেরিতে হলেও অবশেষে জঙ্গিপুরে দমকল কেন্দ্র গড়ে ওঠার ফল পাচ্ছেন শহরবাসী। জঙ্গিপুরবাসীকে দমকল কেন্দ্র উপহার দেওয়ায় জনপ্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এ প্রসঙ্গে জঙ্গিপুর ফায়ার স্টেশনের ওসি এম রহমান বলেন, গত মাসখানেকের মধ্যে আমরা ছোটবড় অগ্নি সংযোগের ১৬টি স্পটে হাজির হয়েছি। তারমধ্যে আগুন নেভানো থেকে বোম্ব ডিস্পোজাল ও সাধারণ মানুষকে সাহায্য করতেও আমরা গিয়েছি। এলাকার মানুষজন আমাদের সঙ্গে ভালো সহযোগিতা করছেন।
জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান বলেন, আমরা সবে ফায়ার স্টেশনটি চালু করতে পেরেছি। ভবিষ্যতে যাতে আরও উন্নত সরঞ্জাম দেওয়া হয় তারজন্য আমরা দমকল মন্ত্রীকে অনুরোধ করব।
মঙ্গলবার সকালে রঘুনাথগঞ্জে বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি বন্ধ থাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিল্ডিং থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলি বের হতে দেখেন এলাকাবাসী। তারপর কিছুক্ষণ পরই আগুনের শিখা দেখা যায়। বিল্ডিংয়ের পাশেই একটি বেসরকারি হাসপাতাল থাকায় রোগী ও পরিজনদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। রঘুনাথগঞ্জ শহরে তথা জঙ্গিপুরের আশপাশে অগ্নি সংযোগ ঘটলে বালতিতে করে জল ছিটিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চলত। এছাড়া এতদিন ধুলিয়ান ফায়ার স্টেশনের উপর নির্ভর করতে হতো ভুক্তভোগী ও জঙ্গিপুরের মানুষকে। প্রায় ৫০কিমি দূরে ধুলিয়ান শহর থেকে দমকলের গাড়ি আসতে ঘণ্টা খানেকেরও বেশি সময় লাগত। দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছনোর আগেই যা হওয়ার তা হয়ে যেত। ফলে জঙ্গিপুরের দমকল কেন্দ্রের দাবি উঠেছিল বহু আগেই।
এলাকাবাসীর দাবি মেনে গতবছর উমরপুরে ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশেই ফায়ার স্টেশনে নির্মাণের কাজ শুরু হয়। গত মাসেই কলকাতা থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে এই ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে স্টেশনটিতে একটি বড়ো ও অপরটি মাঝারি মাপের মোট দু’টি ইঞ্জিন রয়েছে। এছাড়াও শহরের অলিগলিতে যেখানে দমকলের গাড়ি পৌঁছন সম্ভব নয় সেখানে পৌঁছতে একটি পাম্প বাইক ও রয়েছে। যদিও আরও উন্নত ও আধুনিক সরঞ্জাম দিয়ে ফায়ার স্টেশনটিকে সম্পূর্ণ রূপে গড়ে তোলার আবেদন করেছেন এলাকাবাসী। কেন না জঙ্গিপুরে একাধিক ছোটবড় শপিং মল, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বেসরকারি হাসপাতালও গড়ে উঠেছে। বহুতলগুলিতে আগুন লাগলে স্বয়ংক্রিয় সিঁড়ি ব্যবহার করে যাতে আগুন নেভানোর কাজ করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে একটি অটোমেটিক র্যাডার আনার দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। এছাড়াও, অগ্নিনির্বাপক কম্বল, বালতি ও ফোম সব যাবতীয় সরঞ্জাম যাতে দেওয়া হয় তার আবেদন জানিয়েছেন এলাকাবাসী