
গোপাল বিশ্বাস -নদীয়া- অর্থের বিনিময়ে ‘সাবালিকা’ বানানোর অভিযোগ—তৃণমূল নেতার নাম জড়িয়ে রাজনৈতিক তোলপাড়, SIR (স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন) চলাকালীন নদিয়ার শান্তিপুরে সামনে এল চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। অর্থের বিনিময়ে জাল স্কুল সার্টিফিকেট বিক্রির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে শান্তিপুর ব্লকের আরবান্দি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের রবীন্দ্রনাথ শিশু শিক্ষা কেন্দ্রকে ঘিরে। অভিযোগ, ব্যাক ডেট দিয়ে তৎকালীন শিক্ষিকার জাল সই ব্যবহার করে স্কুল সার্টিফিকেট তৈরি করে তা বিক্রি করা হচ্ছে। এমনকি যে ব্যক্তি কোনওদিন ওই স্কুলে পড়াশোনাই করেননি, তাকেও স্কুল সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে এসেছে শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক আমজাদ শেখ এবং স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী তথা তৃণমূল নেতা আলতাব (আলতাফ) শেখের। অভিযোগ অনুযায়ী, শান্তিপুর থানার পাঁচপোতা গ্রামের বাসিন্দা আসলাম শেখের নামে ভুয়ো স্কুল সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে। ঘটনার সূত্রপাত এক নাবালিকার পালিয়ে বিয়ে করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। পরিবার শান্তিপুর থানায় গেলে পুলিশের কাছে একটি রবীন্দ্রনাথ শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের স্কুল সার্টিফিকেট পেশ করা হয়, যেখানে ওই নাবালিকাকে সাবালিকা হিসেবে দেখানো হয়। অথচ পরিবারের দাবি, মেয়েটির প্রকৃত বয়স মাত্র ১৭ বছর। পরিবারের অভিযোগ, পরে স্কুলের শিক্ষক আমজাদ শেখের সঙ্গে কথা বললে তিনি জাল সার্টিফিকেট দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। সেই কথোপকথনের ভিডিও ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। যদিও সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আমজাদ শেখ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে দায় চাপিয়েছেন বর্তমান প্রধান শিক্ষকের উপর। অন্যদিকে, তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী আলতাব শেখ এই ঘটনাকে “সম্পূর্ণ রাজনৈতিক চক্রান্ত” বলে দাবি করে অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক রাজনৈতিক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিজেপির পক্ষ থেকে অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্ত, জাল সার্টিফিকেট চক্রের পর্দাফাঁস এবং দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে। SIR চলাকালীন এই অভিযোগ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিল। এখন দেখার, তদন্তে এই জাল সার্টিফিকেট চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত, কতজনকে এইভাবে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে এবং এর পিছনে কোনও বড় সংগঠিত চক্র কাজ করছে কি না।








