মুর্শিদাবাদে মাত্র তিন পয়সা পিস বাঁধাকপি! তাও মাঠ থেকে কিনছে না কেউ!


রাজেন্দ্র নাথ দত্ত:মুর্শিদাবাদ: বাঁধাকপির দাম নেই, খরচ না ওঠায় জমিতেই ফসল নষ্ট করছেন চাষিরা। মাত্র তিন পয়সা পিস বাঁধাকপি! তাও মাঠ থেকে কিনছে না কেউ। চাষের জমিতে সারি সারি কপি পড়ে আছে। বিঘের পর বিঘে জমিয়ে কপি চাষ করেও লাভ পাচ্ছে না চাষিরা। নিরুপায় হয়ে এখন জমি খালি করতে ওই কপি জমিতেই ট্রাক্টর চালিয়ে নষ্ট করছেন চাষিরা। বহরমপুরের বানিনাথপুর এলাকায় কপি চাষ করে ফাঁপরে পড়েছেন অনেকেই। চাষিদের দাবি, বাঁধাকপি জমি থেকে তুলে বাজারে নিয়ে গিয়ে চাষের খরচ উঠছে না। তাই ট্রাক্টর চালিয়ে জমির ফসল নষ্ট করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছি। এতে পরের মরশুমের জন্য জমির উর্বরতা বাড়বে। একই ছবি দেখা যাচ্ছে জেলার বিভিন্ন ব্লকেও। কয়েকদিন আগেও হরিহরপাড়ায় একজন চাষি ফসলের দাম না পেয়ে জমিতেই ট্রাক্টর চালিয়ে বাঁধাকপি নষ্ট করে দেন। এক বিঘে জমিতে বাঁধাকপি চাষ করতে প্রায় আট হাজার টাকা খরচ হয়। তাতে প্রায় ৯ হাজার পিস কপির ফলন হয়। এদিকে ওই জমির ফসল বিক্রির জন্য আড়তদাররা দাম দিচ্ছে মাত্র তিন হাজার টাকা। অর্থাৎ ৯ হাজার পিস কপির দাম মাত্র তিন হাজার টাকা। মাত্র তিন পয়সা দামে কপি বিক্রি করতে নারাজ চাষিরা। বানিনাথপুর এলাকার চাষি ধর্মেন্দ্র মণ্ডল বলেন, ফসলের দাম নেই। দুই বিঘা জমিতে বাঁধাকপি চাষ করেছিলাম। বছরের শুরুতে ১২ টাকা পিস কপি বিক্রি করেছি। এখন একটা জমিতে ৯ হাজার কপি রয়েছে। বিঘা প্রতি সাত হাজার আট হাজার খরচ হয় চাষে। কিন্তু কপি বিক্রি হয়নি। এক বিঘা জমির কপির দাম দিচ্ছে মাত্র তিন হাজার টাকা। তাই কপি জমিতেই নষ্ট করে দিয়েছি। তাতে জমির উর্বরতা বাড়বে। মাটিতে নাইট্রোজেন বাড়বে। পরের মরশুমে লাল শাক চাষ করতে সুবিধা হবে। কিছু কপি অনেককে খাইয়ে দিচ্ছি। ওই এলাকার অপর এক চাষি স্বপন মণ্ডল ও বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, ঠিক সময়ে জমি থেকে কপি না তুললে কপি সব পেকে যায়। অনেকসময় সেগুলি জমিতেই ফেটে যায়। সেই কপি বিক্রি হয় না। এখন জমিতে কপি থাকলেও বিক্রি হচ্ছে না। দুই বিঘা জমিতে কপি চাষ করে এখন দাম মিলছে না। খুব ক্ষতি হল আমাদের। খরচ করে চাষ করে গোরুকে খাওয়াতে হচ্ছে আমাদের। এভাবে কপি চাষ করে ক্ষতি হবে ভাবিনি। এলাকার অপর এক চাষি বলেন, অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম দিকে ১০-১২ টাকা পিস দামে কপি বিক্রি করেছি। আমাদের এখানকার কপি বিহার ও ঝাড়খণ্ড যায়। সেখানে অন্য জায়গার কপি ঢুকে যাওয়ায় আমাদের কপির দাম নেই। এখন তিন চার পয়সা দরে কপির দাম দিচ্ছে। তাও কেনার লোক নেই।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

About The Author


Verified by MonsterInsights