পুরুলিয়াঃ পুরুলিয়ার মানবাজার ১ নম্বর ব্লকের ভালুবাসা গ্রাম পঞ্চায়েতে অনাস্থার ভোটাভোটির পর বোর্ড গঠন হলো আজ। এমনিতেই অনাস্থা ঘিরে এলাকায় অস্বস্তিতে আছে শাসকদল তৃণমূল। মঙ্গলবার বোর্ড গঠন এর কারণে পুলিশের কড়া নজরদারি ছিল পঞ্চায়েত চত্বরে। জানা গিয়েছে, গত ৩রা নভেম্বর পঞ্চায়েত প্রধান মীরা মাহাতোর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজন পোষন, পঞ্চায়েতের কাজে অন্যান্য সদস্য সদস্যাদের প্রাধান্য না দেওয়া সহ একাধিক অভিযোগ তুলে অনাস্থা আনে ৬ জন সদস্য সদস্যা। প্রসঙ্গত, বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের ৫ প্রার্থী জয়লাভ করলেও সিপিআইএমের ৩ ও নির্দল এর ৩ জন সদস্য সদস্যাকে সাথে নিয়ে বোর্ড গঠন হয় তখন। এইভাবে পঞ্চায়েত পরিচালনার সময় তৃণমূল থেকে নির্বাচিত সদস্য ভাদরী মাহাতোর মৃত্যু হলে শাসক গোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় চারজন।
পরে তিন জন সিপিআইএম সদস্য ও তিন নির্দল সদস্য তৃণমূলে যোগদান করেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের হাত ধরে l এই অবধি সব ঠিক ঠাকই ছিলো l মূলত নির্দল প্রার্থীরা বিগত নির্বাচনে তৃণমূল দলের দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল এবং বিরোধী দল সিপিআইএমের সাথে সমঝোতা করে পঞ্চায়েত পরিচালনার কার্যভার দায়িত্বে নিয়েছিল। যার কারনে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সাথে মনোমালিন্যের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। যারা দলের বিরুদ্ধে গোষ্ঠী তৈরি করে দলকে দুর্বল করেছিলো সেই দলের নির্দল প্রার্থীরা পঞ্চায়েত পরিচালনা করুক তা তা তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর পছন্দ ছিল না। এই নিয়ে এলাকায় অনেকদিন ধরেই দলের অন্দরে এক গোষ্ঠীর প্রতি আরেক গোষ্ঠীর ক্ষোভ বাড়ছিল।
এই প্রসঙ্গে, এলাকার তৃণমূল নেতা তথা তৃণমূল দলের জেলা কমিটির সদস্য প্রভাত মহাত জানান, দলকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে স্থানীয় এক নেতা ও প্রধান দুর্নীতিতে লিপ্ত ছিলেন। ফলে বঞ্চিত হচ্ছিলেন এলাকার সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে তৃণমূল দলের বর্ষীয়ান নেতা শ্যামসুন্দর মাহাতো জানান পঞ্চায়েত পরিচালকদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ অভিযোগ তুলছিল তাই দলগতভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ নতুনভাবে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন সিজাডি সংসদ থেকে তৃণমূল দলের নির্বাচিত সদস্যা চৈতালি মাহাতো। যদিও বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে জেলা তৃণমূলের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে বলে দাবি করেন মানবাজার 1 নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দেবেন্দ্রনাথ মাহাতো। আর এখানেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলো আবার। ব্লক তৃণমূলের সভাপতি জানান, বোর্ড গঠনের সময় প্রস্তাবক জেলার নির্দেশ অমান্য করে প্রধানের দায়িত্ব এক সদস্যার হাতে তুলে দিয়েছে। যদিও এই বিষয়টিকে পাত্তা দিতে নারাজ অপর গোষ্ঠী। অন্যদিকে প্রাক্তন প্রধান মীরা মাহাতো তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। জেলার তিন পৌরসভার নির্বাচন ঘিরে যখন প্রচারে ব্যস্ত দল। তখনই পাঁচ বছরের মেয়াদী পঞ্চায়েত স্তরে এমনই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় এখন চরম অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা তৃণমূল।