মুর্শিদাবাদে উদ্ধার হওয়ার পর মৃত্যু বিরল প্রজাতির ‘ভারতীয় হগ ডিয়ার’-এর


রাজেন্দ্র নাথ দত্ত:মুর্শিদাবাদ: মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা থানা এলাকায় একটি পূর্ণবয়স্ক ‘ভারতীয় হগ ডিয়ার’ প্রজাতির হরিণের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকালে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল । ইতিমধ্যেই বনদপ্তরের আধিকারিকরা বিলুপ্তপ্রায় হরিণটির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জঙ্গিপুর নিয়ে গেছেন। ‘ভারতীয় হগ ডিয়ার’ প্রজাতির হরিণ ভারতীয় বন্যপ্রাণ (নিরাপত্তা) আইনে ১ নম্বর তফসিলের অন্তর্ভুক্ত।
বৃহস্পতিবার সকালে ফারাক্কা নতুন বস্তি এলাকার বাসিন্দা ফটিক সরকার তাঁর ছেলে বিজয় সরকারকে নিয়ে ফারাক্কা ব্যারেজের কাছে বেনিয়াগ্রাম এলাকায় গঙ্গা নদীতে মাছ ধরছিলেন। বাবা এবং ছেলে নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরতে মালদার জেলার হোসেনপুর চরের দিকে চলে যান। সেই সময় দু’জনে দেখতে পান একটি প্রাণীর কেবলমাত্র শিং এবং কান জলের উপর ভেসে রয়েছে।ফটিক সরকার বলেন, ‘প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম গঙ্গা নদী দিয়ে কোনও গরু ভেসে যাচ্ছে। এরপর নৌকা নিয়ে কাছে গিয়ে দেখতে পাই একটি পূর্ণবয়স্ক হরিণ গঙ্গা নদী দিয়ে ভেসে যাচ্ছে। প্রাণীটিকে বাঁচানোর জন্য এরপর আমরা দু’জনে মিলে কোনওক্রমে সেটিকে নৌকায় তুলে পাড়ের দিকে রওনা দিই। কিন্তু হরিণটিকে উদ্ধারের মিনিট পনেরোর মধ্যে সেটির মৃত্যু হয়।’ ফটিকবাবু বলেন, ‘হরিণটিকে যখন আমরা নদী থেকে উদ্ধার করি তখন তার মুখ এবং পায়ের বিভিন্ন অংশ দিয়ে রক্ত বার হচ্ছিল। আমাদের অনুমান হরিণটি ফারাক্কা ব্যারেজের গেটে ধাক্কা লেগে আহত হয়েছিল। রক্তাক্ত অবস্থায় সেটি গঙ্গা নদীর স্রোতে বয়ে যাচ্ছিল। নৌকার মধ্যেও হরিণটির মুখ দিয়ে প্রচুর রক্তপাত হয়।’ তবে বিরল প্রজাতির এই হরিণটি কীভাবে গঙ্গা নদীতে এল তা স্থানীয় বাসিন্দারা বলতে পারেনি। বনদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, বিলুপ্তপ্রায় এই হরিণটি নেপাল, উত্তর ভারত ,গাঙ্গেয় সমতল ভূমির বিভিন্ন এলাকায় দেখতে পাওয়া যায়। আমাদের অনুমান সম্প্রতি বিহার, নেপাল এবং সংলগ্ন এলাকায় যে বন্যা হয়েছিল সেই সময় কোনও বনাঞ্চল থেকে এই প্রাণীটি ভেসে গিয়েছিল। এরপর এই প্রাণীটি আশ্রয়ের খোঁজে বিভিন্ন দিকে গেলেও সম্ভবত কোনও বনাঞ্চল খুঁজে না পেয়ে কোনওভাবে গঙ্গা নদীর জলে পড়ে যায় এবং ভাসতে ভাসতে মুর্শিদাবাদ জেলাতে এসে পৌঁছেছিল। হরিণ উদ্ধারের খবর পেয়ে ফারাক্কা থানার আধিকারিক এবং বনদপ্তরের আধিকারিকেরা দ্রুত এলাকায় পৌঁছান। আজ দুপুর নাগাদ বনদপ্তরের আধিকারিকেরা হরিণটির দেহ জঙ্গিপুর নিয়ে গেছেন ময়নাতদন্তের জন্য।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

About The Author


Verified by MonsterInsights