রান্নার জাতীয় প্রতিযোগিতায় ফাইনালে কলকাতা ও দুর্গাপুর


সাড়ে চারশো বছর আগেও এদেশের মানুষ আলুর স্বাদ জানত না অধিকাংশ জাতের লঙ্কা ও টম্যাটো এসেছে ইউরোপিয়ানদের হাত ধরে তাই এইসব বাদ দিয়েই একসময় রসনার তৃপ্তি হত। ছাপার যুগের প্রথম দিকের এমন রান্নার বই আছে, যেখানে আড়াই পদের উল্লেখ রয়েছে আলু ছাড়া। আরও একটা ব্যাপার আছে। মশলার খোঁজেই একদিন সুদূর ইউরোপ থেকে বণিকরা স্থলপথে এসেছিলেন ভারতে, সেই মশলার গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে তারা আবিষ্কার করেছিলেন একের পর এক জলপথ। গ্লোবালাইজেশনের ধাক্কায় হারিয়ে যেতে বসা নানা রান্না নতুন করে প্রাণ পেল আগামী দিনের শেফদের হাতের ছোঁয়ায়। এরাজ্যের দুর্গাপুরে হয়ে গেল এভারেস্ট বেটার কিচেন কুলিনারি চ্যালেঞ্জ বা এভারেস্ট বিকেসিসি, এবার সেশন ৬। পশ্চিমবঙ্গ থেকেও বেশ কয়েকজন সেমিফাইনালের গণ্ডী পার করেছেন, ফাইনালের জন্য তাঁদের যেতে হবে অন্য রাজ্যে।
দুর্গাপুরে হোটেল ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান এনএসএইচএম-এ এবারের প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল ‘ফ্লেভারস অফ ইন্ডিয়া’ মানে ভারতের রান্নাবান্নার আস্বাদ। মূল বিষয় ছিল ঐতিহ্যবাহী পদ ও মিষ্টান্ন। তাতে ছাত্রছাত্রীদের হাতের গুণে অনেকেই আস্বাদ নিয়েছেন হারাতে বসা রান্নার। পুরনো দিনের রান্না আর তা পরিবেশন করা হয়েছে ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে আপ্যায়নের আধুনিকতার মিশেলে। শুধু রান্না করে মন মাতানো নয়, উপরি পাওনা হল, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আগামী দিনের শেফরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পেরেছেন। বিভিন্ন প্রদেশ ও ঘরানার রান্নার সঙ্গেও ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হতে পেরেছেন।
সেশন ৫ মোট ১৭টি শহরজুড়ে হচ্ছে, এর মধ্যে রয়েছে: লখনউ, দুর্গাপুর, চণ্ডীগড়, দেরাদুন, দিল্লি এনসিআর, ইন্দোর, কোট্টায়ম, বেঙ্গালুরু, জয়পুর, পুণে, পাটান, মুম্বই, কোলাপুর ও গোয়া। প্রতিটি শহরের চ্যাম্পিয়নরা মার্চের ২৯-৩০ তারিখ চূড়ান্ত পর্যায়ে রান্না করবেন মুম্বইয়ে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

এই প্রতিযোগিতায় পাশে রয়েছে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের অধীন অবিশ্বাস্য ভারত; উত্তরপ্রদেশ পর্যটন, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড, উইসডম কেরিয়ার এডুকেশন, মাইমেনু৩৬৫ ও বায়ো নিউট্রিয়েন্টস (ইন্ডিয়া) প্রাইভেট লিমিটেড। বেটার কিচেন-এর প্রকাশক একতা ভার্গব বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল, ভারতের আঞ্চলিক খাবারের প্রচারের পাশাপাশি ভবিষ্য়তের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় ছাত্রছাত্রীদের প্রস্তুত করা। খাবারের মধ্যে আঞ্চলিক উপাদান ব্যবহার করা, হারানো রেসিপি পুনরুদ্ধার করা ও পরের প্রজন্মের শেফদের উৎসাহ প্রদান করাও আমাদের উদ্দেশ্য। এবছর আমরা ১ কোটি টাকার স্কলারশিপ দিচ্ছি মার্কিন জে১ ডব্লিউসিই শেফ এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের মাধ্যমে, এক বছরের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পেড ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে।” এনআইএইচটিএম দুর্গাপুর এনএসএইচএম নলেজ ক্যাম্পাসের অধ্যক্ষ ডঃ মিলিন্দ মনে করেন, জাতীয় স্তরে প্রতিযোগিতার সুযোগ পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের আরও মেলে ধরার সুযোগ পেয়েছেন। এই সিজিন যত বেশি করে হবে ছাত্রছাত্রীরাও তত বেশি সুযোগ পাবে।

About The Author


Verified by MonsterInsights