ইন্দ্রজিৎ আইচঃ উপযুক্ত গাইডের অভাবে দক্ষিন ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে এ রাজ্যের অনেককেই নানা অসুবিধায় পড়তে হয়। কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন বা চিকিৎসা করানোর পদ্বতিই বা কি এইসব নানা দুশ্চিন্তা নিয়ে অনেকেই চিকিৎসা করাতেও যেতে পারেনা। এবার সেই সমস্যা দূর করতে দক্ষিন ভারতের বিশেষ করে চেন্নাইয়ের সু-প্রসিদ্ধ চিকিৎসকরা হাওড়ার এসে প্রাথমিক রোগ নির্নয় করার সিদ্ধান্ত নিল। উত্তর হাওড়ার নিউ আলফা নার্সিং হোমের উদ্যোগে চেন্নাইয়ের এম জি এম হেলথ কেয়ারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে এই ব্যাবস্থা করা হয়েছে। এ বিষয়ে শনিবার হাওড়ায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে চেন্নাইয়ের চিকিৎসকরা অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন এম জি এম হেলথকেয়ারের চিকিৎসক সার্জিক্যাল অনকোলজির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডক্টর বালাজি রামানী, ক্লিনিক্যাল লিড গ্যাস্ট্রো এন্ট্রোলজি এন্ড হেপাটোলজি ডক্টর অরুল প্রকাশ, ইন্সটিটিউট অফ লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট এন্ড এইচ পি বি সার্জারী ডক্টর শ্রীকান্থ তুম্মালা,
ক্লিনিক্যাল লিড জেনারেল, মিনিম্যাল এক্সেস (জি আই) এন্ড বেরিয়াট্রিক সার্জারীর সিনিয়র কনসালটেন্ট ডক্টর দিপক শুভ্রামনিয়াম।
নিউ আলফা নার্সিং হোমের নির্দেশক অজয় রায় বলেন, কোভিড মহামারীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেকেই সর্বশান্ত হয়েছেন। আর্থিক সমস্যার কারণে তারা চেন্নাইয়ের মতো জায়গায় গিয়ে চিকিতসা করাতে যেতে পারছেনা। এইসব অসহায় মানুষদের যাতে হাওড়াতে বসেই চেন্নাইয়ের মতো হাসপাতালের চিকিতসকদের এনে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া যায় তাই তাদের এই উদ্যোগ। ডাঃ দীপক সুব্রামানিয়ান জানান, ল্যাপারোস্কোপিক, গ্যাস্ট্রো এবং ব্যারিয়াট্রিক সার্জারির ক্ষেত্রে এম জি এম এর পরিষেবা অনেক ভালো। এখন থেকে সেই পরিষেবা তারা হাওড়া থেকেই দিতে পারবেন। কোভিডের কথা মাথায় রেখে এ রাজ্যে সল্পমূল্যে তারা এই চিকিৎসা পরিষেবা দেবেন। গলব্লাডার সার্জারি, অ্যাসিড রিফ্লাক্স ডিজিজ সার্জারি, হার্নিয়া সার্জারি এবং অন্যান্য অনেক উন্নত গ্যাস্ট্রো চিকিৎসা সহ গ্যাস্ট্রোর জন্য করা সমস্ত সার্জারি অনেক কম খরচে করতে পারি।
ডাঃ শ্রীকান্ত থুম্মালা বলেন, লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন, পেডিয়াট্রিক লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশন, ম্যালিগন্যান্ট, লিভার টিউমারের সার্জারি, পিত্তথলির ক্যান্সার সার্জারি, পিত্ত নালী টিউমার, পেডিয়াট্রিক লিভার সমস্যা, অগ্ন্যাশয় টিউমার, হেপাটাইটিস চিকিৎসায় এ রাজ্য থেকে বহু মানুষ চেন্নাইয়ে চিকিৎসা করাতে যান। তাদের এখন হাওড়াতেই প্রাথমিক চিকিৎসা করা হবে। তারপর প্রয়োজনবোধে চেন্নাই পাঠানো হবে। ডাঃ বালাজি রামানি বলেন, চেন্নাইয়ে বাংলার লোকেদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের একটি দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। এমজিএম হেলথকেয়ার সেটিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে এবার বাংলাতে এসে চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছে। কলকাতা, হাওড়া, শিলিগুড়ি এবং বর্ধমান সহ এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তারা প্রতি মাসে অনকোলজি ওআরসি (আউট রিচ ক্লিনিক)-এর ব্যবস্থা করছে। যেখানে রোগীর প্রাথমিক ক্লিনিকাল মূল্যায়ণ এবং অপারেশান করা হবে। তারপর প্রয়োজন হলে চেন্নাই পাঠানো হবে। স্তন, থাইরয়েড, মাথা ও ঘাড়, ওরাল ক্যান্সার, ডিম্বাশয় ও জরায়ুর ক্যান্সার এবং টিউমার, কিডনির টিউমার এবং পেট, কোলন, অগ্ন্যাশয় এবং লিভার গলব্লাডার ইত্যাদি সহ সমস্ত গ্যাস্ট্রো টিউমার সব ক্ষেত্রেই চেন্নাইয়ের ধাঁচে এখানে প্রাথমিক চিকিতসা হবে বলে তিনি জানান। ডক্টর আরুলপ্রকাশ বলেন,গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি এবং এন্ডোস্কোপি, পেপটিক আলসার, স্থূলতার জন্য এন্ডোস্কোপি চিকিৎসা, লিভার, অগ্ন্যাশয় এবং পিত্তথলির চিকিৎসার ক্ষেত্রেও তারা হাওড়ায় এসে চেন্নাইয়ের মতো উপযুক্ত পরিষেবা দিতে সক্ষম।