রাজেন্দ্র নাথ দত্ত:মুর্শিদাবাদ: এক দশক আগেও কেউ পায়ে টানা রিকশ ছাড়া ভাবতে পারতেন না। মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি শহরে দ্রুত অফিস পৌঁছনো থেকে বাজারহাট করা, হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া সবকিছুই চলত রিকশর উপর নির্ভর করে। শহরে রিকশ এখনও রয়েছে। তবে সংখ্যাটা কয়েক হাজার থেকে মাত্র কুড়িতে এসে দাঁড়িয়েছে। এখন বাসিন্দারা শখে রিকশয় চড়েন। রিকশর বাজার দখল করেছে টোটো।
বর্তমানে কান্দি শহরের একমাত্র নেতাজি বাস টার্মিনাস এলাকায় দেখা যায় সাইকেল রিকশ। তবে হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র। অথচ আজ থেকে এক দশক আগে কান্দি শহরে প্রায় সাড়ে চার হাজার সাইকেল রিকশ চলত বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে। রিকশর দাপটে যানজটে নাকাল হতেন বাসিন্দারা। কিন্তু বর্তমানে সেই জায়গার দখল নিয়েছে টোটো। রিকশ চালকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে এখন শহরে মাত্র ২০ জন রিকশ চালান। তাঁদের আর্থিক অবস্থাও ভালো নয়। এখন আর জরুরি প্রয়োজনে কেউ রিকশয় চড়েন না। অনেকে শখে রিকশয় চড়েন। যেমন জেমো রাজবাড়ির ( রাজা ঠিক নয়, এরা জমিদার, নবাবের আন্ডারে কান্দির সিংহরায় জমিদার ছিলেন… তার আন্ডারে জেমো রাজবাড়ী, বাঘডাঙা রাজবাড়ী….) বাবুদের কেউ কেউ রিকশয় চড়েন বলে দাবি। (এখন আর ওইসব জমিদারি প্রথা আছে না কি ১৯৪৭ এর পর??চাষজমি আছে ভাগচাষী দ্বারা চাষ করে।)
শহরের রিকশ চালক আদিত্য চুনারি জানালেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে এই শহরে রিকশ টানছেন তিনি। রিকশর উপর মায়া পড়ে যাওয়ায় তা ছাড়তে পারছেন না। অপর চালক বাক্কার শেখ বলেন, এই শহরে যাঁরা রিকশ চালক রয়েছেন তাঁদের কেউ ৩০ বছর কেউ বা তারও বেশি সময় ধরে রিকশ চালিয়েছেন। আমারও প্রায় ৫০ বছর হতে চলল। তবে টোটোর মতো একই ভাড়া নিলেও আর কেউ রিকশয় উঠতে চান না। দুঃখ হয় চোখের সামনে এসব ঘটল। তবে আমার আর্থিক সঙ্গতিও তেমন নেই। তাই দিনে ৫০ থেকে ১০০ টাকা যতটা হয় বেশ ভালো আছি।