ইন্দ্রজিৎ আইচঃ সম্প্রতি দুদিন ধরে নৃত্যলোকের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো তাদের ২২ তম নৃত্যলোক উৎসব। প্রথমদিন অর্থাৎ ১৮ ই ডিসেম্বর শনিবার মিনারভা থিয়েটারে প্রদীপ জ্বালিয়ে এই উৎসবের উদ্বোধন করেন গুরু শঙ্কর নারায়ণ স্বামী (প্রখ্যাত মৃদঙ্গ বাদক), নৃত্যশিল্পী অনিতা মল্লিক, মনিপুরী নৃত্যশিল্পী পৌষালী চট্টোপাধ্যায়, অন্ধপ্রদেশের কুচিপুরী নৃত্যগুরু কে ভি লক্ষী, ময়ূর ভঞ্জ ছৌ শিল্পী গুরু ত্রিলোচন মহান্ত এবং নৃত্যলোক সংস্থার কর্ণধার নৃত্যশিল্পী সুতপা আওন প্রধান। সকলেই তাদের ভাষণে নৃত্যলোকের এই উৎসবের আয়োজনের জন্য সাধুবাদ জানায়। সেদিনের প্রথম নৃত্যানুষ্ঠান অনুষ্ঠানটি হয় কোন্নকোল তালের মাধ্যমে। অংশগ্রহণ করে নৃত্যলোকের ছাত্রীরা। এরপর একে একে
ভরতনাট্যম নৃত্যপদ, দিপাঞ্জলী, গণেশ বন্দনা ও শ্রীকৃষ্ণ আধারিত বনমালী নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যলোকের ছাত্রীবৃন্দরা।
পরিবেশিত হয় কুচিপুরী তান্ডব নৃত্য। পরিবেশনায় ছিল নটরাজ মিউজিক ডান্স একাডেমি। মঞ্চস্থ হয় পৌষালী চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় পটকথা মনিপুরী নৃত্য। পরিবেশনায় ছিল নান্দনিক মুভমেন্ট আর্ট। এদিনের সর্বশেষ নিবেদন ছিল নৃত্যলোকের ছাত্রীদের অনবদ্য ময়ূরভঞ্জ (মেছুয়া নৃত্য)। যার প্রশিক্ষক ছিলেন গুরু ত্রিলোচন মহান্ত।
নৃত্যলোক উৎসবের দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানটি ছিল কামারহাটি নজরুল মঞ্চে। এদিনের অনুষ্ঠান শুরু হয় ক্যালকাটা কয়্যারের দেশাত্মবোধক গানের মাধ্যমে। পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক কল্যাণ সেনবরাট।
এদিনের দ্বিতীয় নিবেদন ছিল এই সময়ের বাংলা গানের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী জয়তী চক্রবর্তীর গান। তিনি সেদিন বিভিন্ন বাংলাগান ও রবীন্দ্র সংগীতে আসর মাতিয়ে দেন। সেদিনের সর্বশেষ নিবেদন ছিল “প্রকৃতি চাঁদলিকা”। ভাবনা ও পরিকল্পনা এবং নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন সুতপা আওন প্রধান। প্রকৃতির নেপথ্য কণ্ঠে ছিলেন জয়তী চক্রবর্তী এবং মায়ের নেপথ্য গানে ছিলেন মৌমিতা ব্যানার্জী। সংগীত পরিচালনায় ছিলেন কল্যাণ সেন বরাট। নৃত্যলোকের ছাত্রীদের এই নৃত্যনাট্যটি সকল দর্শকদের বিশেষ ভাবে নজর কারে। মঞ্চ সজ্জা, আলোক পরিকল্পনা ও রূপ সজ্জায় ছিলেন ড তরুণ প্রধান, গোপাল ঘোষ এবং বাবলু মন্ডল। সবমিলিয়ে দুদিনের নৃত্যলোক উৎসব ২০২১ সাড়ম্বরে উদযাপিত হলো।