বিদেশি নাগরিকদের টেক সাপোর্টের নাম করে কোটি টাকা প্রতারনার অভিযোগে সল্টলেক থেকে ধৃত ৯


বিশ্বজিৎ নাথঃ এবার আন্তর্জাতিক সাইবার প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস হল। বিদেশি নাগরিকদের টেক সাপোর্টের নাম করে কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে সল্টলেকের এ এল ব্লক থেকে নয় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করলো বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম আমব্রনিল বোস রায় চৌধুরী ওরফে রাহুল, সায়াদ এজাজ হুসেন, তাইফুর আলি শেখ, কাশিফ আলি শেখ, আয়াজ আফরোজ খান, নিখিল শেঠী, সায়াদ রাফায়েল আলি, মহম্মদ হাবীবুল্লাহ ও সুনীল কুমার পাধ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, সল্টলেকের এ এল ব্লকের ৩১ নম্বর বাড়িতে কল সেন্টার চালু করে বিদেশি নাগরিকদের প্রতারণা করতো ধৃতেরা। ওরা মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানির বাসিন্দাদের টার্গেট করতো। অভিযুক্তরা প্রথমে মাইক্রোসফট সফটওয়্যার ব্যবহারকারীদের একটি ডাটা লিস্ট তৈরি করতো। তারপর প্রতারকরা সেই লিস্ট ধরে ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল ব্যবহার করে বিদেশি নাগরিকদের ফোন করতো। ফোনের মাধ্যমে বিদেশি নাগরিকদের টেক সাপোর্টের প্রতিশ্রুতি দিত বলে পুলিশ সূত্রে খবর। টেক সাপোর্টের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিফট কার্ডের মধ্যে দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিত ওই প্রতারকরা। সূত্র বলছে, টেক সাপোর্টের নাম করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অ্যাপেল গিফট কার্ড, গুগল পে গিফট কার্ড, টার্গেট গিফট কার্ডের মধ্যে দিয়ে ডিজিট্যাল টাকা নিত অভিযুক্তরা। পরবর্তীতে সেই গিফট কার্ড গুলিকে অন্য দেশের মধ্যে দিয়ে ভারতীয় মুদ্রায় রূপান্তরিত করে নিজেদের একাউন্টে ট্রান্সফার করিয়ে নিত ওই প্রতারক চক্র। অভিযোগের ভিত্তিতে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানা তদন্তে নামে। তদন্তে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ জানতে পারে ওই আন্তর্জাতিক প্রতারণা চক্রের মূল পান্ডা শাহবাজ সল্টলেকের এ এল ব্লকে একটি অফিস খুলে এই প্রতারণা চক্র চালাচ্ছে। মঙ্গলবার ওই কল সেন্টারে হানা দেয় সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। সেখান থেকে কল সেন্টারের ম্যানেজার আমব্রানিল বোস রায় চৌধুরী ওরফে রাহুল সহ মোট নয়জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। যদিও প্রতারণা চক্রের মূল অভিযুক্ত শাহবাজ পুলিশের গাড়িতে ধাক্কা মেরে নিজের পার্সোনাল গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তকে খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। এ এল ব্লকের কল সেন্টার থেকে পুলিশ ৩০টি কম্পিউটার, ১৩টি মোবাইল ফোন, ৩টি রাউটার, ৩টি হার্ড ডিস্ক, ১টি গাড়ি ও সার্ভার উদ্ধার করেছে। এই প্রতারনা চক্রের শিকড় কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত, তা তদন্ত করে দেখছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ।

About The Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights