ইন্দ্রজিৎ আইচঃ চন্ডীতলা প্রম্পটারের আয়োজনে আকাডেমি মঞ্চে দুটি পর্বে দুটি প্রযোজনা তোতা কাহিনী ও পুরাতন ভৃত্য মঞ্চস্থ হলো। দুটোই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প ও কবিতা। নাট্যরূপ ,সম্পাদনা ও নির্দেশনায় প্রদীপ রায়। মূলত অন্তঃসারশূন্য বাহ্যিক আড়ম্বরপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থার ভয়াবহ পরিণতি দেখানো হয়েছে এ গল্পে। ব্যাঙ্গাত্মক হাস্যরস দিয়ে তোতাকাহিনী নাটক টিকে প্রদীপ রায় মঞ্চস্থ করার প্রয়াস নিয়েছেন। সঙ্গে ভাবনা ও পরিকল্পনা রাকেশ ঘোষ, গানে অভিজিৎ আচার্য্য ও কৃষ্ণেন্দু ভট্টাচার্য্ ও কোরিওগ্রাফি প্রিয়াঙ্কা ঘোষ (রায়)। নাচে গানে অভিনয়ে জমজমাট। ছোট থেকে বড় প্রত্যেকেরই অভিনয়ে দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়। রাজা সম্প্রীতা চক্রবর্তী, ভাগিনা-আদিত্য রায়, সেনাপতি-নীলাদ্রি রায়, পুরহিতগণ – দেবজ্যোতি রায়, সত্যম ঘোষ ও রিতম পান, লিপিকারগণ-অন্বেষা মুখার্জী, সৌরিমা তপাদার ও স্নেহা ঘোষ, স্যাকরা- অরূপ চৌধুরী, কমার-অনিমেষ পাঁজা, কমার গিন্নী- সপ্তবর্ণা আলু, তোতা-পিয়াসা ঘোষ, কতোয়াল ; অর্ণব মুখোপাধ্যায়। আলো-তন্ময় চক্রবর্তী ও মঞ্চ- চঞ্চল আচার্য্য একশ শতাংশ সফল।দ্বিতীয় পর্বে মঞ্চস্ত হয় পুরাতন ভৃত্য। প্রভু ও ভৃত্যের মধ্য চিরকালীন একটি সম্পর্ক যা মমতা ও ভালোবাসার নিবিড় বন্ধনে আবৃত তা এই নাটকে পরিলক্ষিত হয়।ভৃত্য কেষ্ট দেখতে কুৎসিৎ, ভুলো মন, বেখেয়ালি , গিন্নীমার কাছে লাঞ্ছিত হলেও সদাহস্যাময় থেকে বাবুকে কঠিন বসন্ত রোগের হাত থেকে জীবনের বিনিময়ে সেবায় সরিয়ে তুলে। নির্দেশক ও কেষ্ট র চরিত্রে প্রদীপ রায় অনবদ্য। প্রভু অরূপ চৌধুরী ও কর্তৃ তমসা ঘোষ সাথে নিবারণ সৌমিত্র ঘোষ এই নাটকে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। দু একটি চরিত্র নাটকের স্বার্থে আনা হলেও তা যথাযথ।অনুকূল কৌশিক মাল ও পুন্ডরী সুরজিৎ কোলে জমিয়ে রাখে। কুসুম চরিত্রে সপ্তবর্ণা আলু মঞ্চে ষোলআনা মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে। কেষ্ট ও কুসুমের দৃশ্য টি এতোটাই মর্মস্পর্শী যে দর্শকের চোখ ভিজে যায়। ডাক্তারের চরিত্রে অনিমেষ পাঁজা সাবলীল। অয়ন রায়ের আবহ, তন্ময় চক্রবর্তীর আলো, চঞ্চল আচার্য্যর আলো সমীর ঘোষের মেকআপ প্রশংসার দাবি রাখে।