ইন্দ্রজিৎ আইচঃ অপ্রিয় সত্যি হলেও অস্বীকার করার উপায় নেই, মানব সভ্যতার বিবর্তনে ভোগবাদী ব্যাক্তিসর্বস্ব মানসিকতার ফসল হিসেবে মানুষ নিজেদের মানবিক বোধ ক্রমশ হারিয়ে ফেলছে। ধর্মীয় বিশ্বাস আর রাজনৈতিক মতপার্থক্য দিয়ে গড়ে তুলছে এক বিভেদের প্রাচীর। নতুন প্রজন্মের কাছে আমরা তুলে ধরছি এক লজ্জাজনক অধ্যায়। সৃষ্টি হচ্ছে সামাজিক পরিবেশ দূষণ। পাশাপাশি প্রকৃতির আশীর্বাদকে আমরা এবং রাষ্ট্রের পরিচালনায় যাঁরা আছেন তাঁরা অনাদর করছি, কখনও অজ্ঞানতায় কখনও অবহেলায়। ব্যক্তিস্বার্থই হয়ে উঠছে প্রধান বিষয়। ফলে মানব সভ্যতার চরম সংকট ক্রমশই জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে। ধর্মের আধ্যাত্মিক গতিমুখ ও রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতায় থাকা মানুষদের দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ের অভাব দেখা যাচ্ছে। তাই আমরা মনে করি রাষ্ট্রের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় ও ধর্মীয় চিন্তকদের নিয়ে কিছু বিষয়ভিত্তিক কমিটি গড়ে তুলে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হতে পারে।
দেশের সংকট মুহূর্তে বিভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় গুরুরা রাষ্ট্রের হিত চিন্তায় শাসক ও দেশের মানুষের পাশে থেকেছেন। কিন্তু সাংগঠনিক ভাবে বিভিন্ন কমিটি গড়ে তোলা হলে সেখানে শুধু বুদ্ধিজীবীরাই স্থান পান। কেন্দ্র বা রাজ্য কখনও ধর্মীয়গুরুদের সাধনা ও অভিজ্ঞতার নিরিখে সেই সব কমিটিতে সংযোজন করেন না। এই বিষয়ে রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে আলোচনা করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নবদ্বীপধামের মায়াপুরের বৈষ্ণব সন্ন্যাসী মহত্তর মহারাজ। কলকাতা প্রেস ক্লাবে তিনি এক সাংবাদিক সম্মেলনে আরো জানালেন তাঁর পরিকল্পনার কথা। তিনি বল্লেন ৩৩ বছরেরও বেশী সময় ধরে আইটি ইন্ডাস্ট্রীতে থেকেও আধ্যাত্মিক পথে রয়েছেন। নিজের গুরুকে খুঁজে পেতে পাঁচ বছরেরও বেশী সময় লেগেছে। তারপর স্ত্রী-পুত্র, সংসার ছেড়ে সন্ন্যাস নেন। এরপর আর ফিরে যাননি সংসারে। এই শিক্ষিত বৈষ্ণব সন্ন্যাসী কঠোর, কঠিন সাধনার পাশাপাশি মানুষের হিতার্থে নীরবে কাজ করে যান। সারা ভারতবর্ষ জুড়েই তার বিচরণ।