মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে তৃণমূলের ‘কাঁটা’ তৃণমূলই! প্রকাশ্যে আসছে শাসকদলের অন্তর্কলহ! বিরক্তি প্রকাশ খলিলুর রহমানের


রাজেন্দ্র নাথ দত্ত :মুর্শিদাবাদ : মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাসের ভাই আসাদুল বিশ্বাস জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে নির্দল হিসাবে লড়ার কথা ঘোষণা করেছেন আগেই। শুরু করে দিয়েছেন নির্বাচনী প্রস্তুতিও। সুতির তৃণমূল বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের ভাই শাহজাহান বিশ্বাস তিনি আইএসএফ থেকে জঙ্গিপুরে প্রার্থী হয়েছেন । আইএসএফের হয়ে তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছেন! এর জেরে জেলায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল। বিরক্তি প্রকাশ করেছেন খলিলুর রহমান। ইমানির অবশ্য দাবি, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই।
ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে, ততই জঙ্গিপুরে প্রকাশ্যে আসছে শাসকদলের অন্তর্কলহ। দল পরিচালনা নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছেন খলিলুর ও তৃণমূল জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন। দলের ব্লক কমিটি ঘোষণা নিয়ে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন ইমানি। আবার সাগরদিঘিতে এলাকায় খলিলুরের তৈরি করা দলের নির্বাচনী কমিটি ভেঙে দিয়েছেন কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসা বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস । এই পরিস্থিতিতে বাইরনের ভাইয়ের পর ইমানির ভাই পেশায় ব্যবসায়ী শাহজাহানও খলিলুরের বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই জানালেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রার্থী হয়েছি ।’’
শাহজাহানের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে তিনি নিজেই আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। ফুরফুরা শরিফে গিয়ে আইএসএফ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখাও করে এসেছেন। এ ব্যাপারে শাহজাহানকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘‘দু’তরফেই কথাবার্তা চলার পর এটা ঠিক হয়েছে।’’ দাদা তৃণমূলের বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও কেন তিনি আইএসএফের হয়ে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতে অনেক লোকই তৃণমূলে। পদাধিকারীও বটে। বাইরন বিশ্বাস, জাকির সবাই রিলেটিভ। আমি কারও প্রতিপক্ষ নই। আশা করি, আমি জিতব।’’ শাহজাহান জানান, ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘নওশাদ বলেছেন, ‘ফাইনাল’।’’
ভাইয়ের প্রার্থী হতে চাওয়া নিয়ে ইমানি বলেন, ‘‘ওঁকে (শাহজাহানকে) জিজ্ঞেস করুন। আমি তৃণমূলের বিধায়ক। আমি কী বলব ওঁর সম্পর্কে? ওঁর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।’’ জঙ্গিপুর সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা। সেখানে আসাদুল ও শাহজাহান প্রার্থী হলে ভোট কাটাকাটিতে খলিলুরের জেতা মুশকিল হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে শাসকদলের একাংশ। এমনকি সাগরদীঘি, লালগোলা বিধানসভাতেও ভোট তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাবে বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান । ওই দুই বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের থেকে বিরোধীরা এগিয়ে থাকবে এবং নবগ্রাম বিধানসভায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২৪ সালে লিডের পরিমাণ অনেক কমবে অর্থাৎ অর্ধেক হবে। এ নিয়ে খলিলুরের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, আসাদুলের পর শাহজাহানের আইএসএফের টিকিটে প্রার্থী হওয়ার নেপথ্যে ইমানি বিশ্বাসের হাত রয়েছে। খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘ভোটঘোষণার পর এই ধরনের আচরণ কাম্য নয়। সবাই নজর রাখছে। আমিও নজর রাখছি।’’

About The Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights